প্রাক স্বাধীনতা যুগের অনুশীলন সমিতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগ থাকা এহেন RSP এবার কি কালের গর্ভে তলিয়ে যাবে? বাংলার রাজনীতি থেকে মুছে যাবে ত্রিদিব চৌধুরীর হাতে গড়া দল?
সোমবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে RSP-র রাজ্য দলের মর্যাদা বাতিল হতেই এই নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা। কমিশনের এই সিদ্ধান্তে বাংলার বাম রাজনীতিতে বড় প্রভাব পড়তে চলেছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
২০২১-র নির্বাচনে বঙ্গ বিধানসভায় কোনও আসন জিততে পারেনি RSP। এই ভোটেও বামফ্রণ্টের শরিক দল হিসেবেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ১৯৪০-এ প্রতিষ্ঠা পাওয়া এই দল।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই অবস্থায় রাজ্য দলের মর্যাদা খোয়ানোয় বিপ্লবী বাংলা কংগ্রেস বা বলশেভিক পার্টির মতো ধীরে ধীরে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে RSP। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের অন্য দলে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল বলেই মনে করছেন তাঁরা।
এই প্রসঙ্গে মালতিপুরের বিধায়ক আবদুল রহিম বক্সির উদাহরণ দিয়েছেন তাঁরা। মালদা RSP-র দাপুটে নেতা হিসেবে পরিচিত আবদুল রহিম ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে কোদাল-বেলচা প্রতীকে লড়ে হেরে যান।
পরে দলবদলে যোগ দেন জোড়া ফুল শিবিরে। ২০২১-র ভোটে তৃণমূলের হয়ে যেতেন তিনি। একই ঘটনা ঘটেছে আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রাম কেন্দ্রে ক্ষেত্রেও। এখানকার BJP বিধায়ক মনোজ কুমার ওরাওঁ একটা সময় ছিলেন RSP-তেই।
যদিও বিশ্লেষকদের এই দাবি মানতে নারাজ বাম শরিক দল। RSP-র রাজ্য সম্পাদক তপন হোড়ের কথায়, “রাজ্য দলের মর্যাদা হারালেও প্রতীকী প্রত্যাহার করেনি নির্বাচন কমিশন। এই প্রতীকেই ১৯৫২-র নির্বাচনে বিজ্ঞানী মেঘনাধ সাহা জিতেছিলেন।” রাজনৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে এর বিরুদ্ধে লড়াই চলবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তাছাড়া বাংলায় দল কোনও আসন জিততে না পারলেও বাম মনস্ক মানুষের মন থেকে RSP-র প্রভাব মুছে যায়নি বলেও দাবি করেছেন গৌতম হোড়। “কেরালায় আমাদের সাংসদ রয়েছেন। এছাড়া মধ্য প্রদেশ, বিহার থেকে শুরু করে একাধিক রাজ্যে সংগঠন ঢেলে সাজানো হচ্ছে। বাংলাতেও বিভিন্ন ইস্যুতে লড়াই করছি আমরা।” জানিয়েছেন দলের রাজ্য সম্পাদক।
উল্লেখ্য, বাম জমানায় পূর্তর মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতরের মন্ত্রী ছিলেন RSP-র ক্ষিতি গোস্বামী। এছাড়াও এই শরিক দল থেকে কারা দফতরের মন্ত্রীও বেছে নিয়েছিল বামফ্রণ্ট।