‘আগামী বছর আরও বড় করে রামনবমী হবে, পুরো সমাজকে বলব হাতিয়ার নিয়ে রাস্তায় নামতে’, বিস্ফোরক দিলীপ ঘোষ


চম্পক দত্ত: দিলীপ ঘোষের মুখে অস্ত্র হাতে নেওয়ার হুমকি। দেখানোর জন্য নয়, চমকানোর জন্য এবং  প্রয়োজনে তার যা কাজ সেটাই হবে। মঙ্গলবার মেদিনীপুর শহরের এলআইসি মোড়ে বিজেপির শিক্ষক সেলের একটি পথসভায় যোগ দিয়ে একের পর এক এভাবেই হুশিয়ারি দিয়ে গেলেন দিলীপ ঘোষ। বললেন কেউ বাপের বেটা হলে তাকে গ্রেফতার করে দেখাক।

আরও পড়ুন-গোমূত্র পানের অযোগ্য; রয়েছে ১৪ রকম ব্যাকটেরিয়া, জানাল কেন্দ্রের গবেষণা সংস্থা

এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, আমি এডভান্স এক বছর আগে বলে যাচ্ছি পরের বছর যদি এই পরিবেশ তৈরি করে কারণ তখন লোকসভা নির্বাচন থাকবে মে মাসে আর এপ্রিল বা মার্চ মাসে হবে রামনবমী। রামনবমী এবছরের থেকে আরো বড় হবে আগামী বছর। বেশি লোক নিয়ে করব। আর যদি আপনি সুরক্ষা দিতে না পারেন তাহলে দিলীপ ঘোষ তরবারি নিয়ে সামনে দাঁড়াবে। কোন বাপের বেটা আমাকে আটকায় দেখব। আমি পুরো সমাজকে বলব হাতিয়ার নিয়ে রাস্তায় নামতে। আর সেই তলোয়ারটা দেখানোর জন্য নয়, চমকানোর জন্য। আর তলোয়ারের যে কাজ, দরকার হলে সেটাই হবে। দিলীপ ঘোষ বলছে, পারলে এরেস্ট করে দেখাক। কোন বাপের বেটার দম আছে। দিলীপ ঘোষ খাটির গরুর দুধ খেয়েছে, তোদের মতন মাদার ডেয়ারির দুধ খায়নি যে রক্ত জল হয়ে গিয়েছে।
মনে করবেন না কয়েকটা লোককে খেপিয়ে দিয়ে আমাদের ধর্ম কর্ম বন্ধ করে দেবেন। যুগ যুগ ধরে আমরা ধর্ম কর্ম করে এসেছি। আমার পূর্বপুরুষরা থেকেছে আমার উত্তর পুরুষরাও এখানে থাকবে। তাই রামনবমীও হবে কৃষ্ণ জন্মজয়ন্তীও হবে।

এখানেই থেমে থাকেননি দিলীপবাবু। বিজেপি নেতা বলেন,  এখানকার হিন্দু সমাজকে ভয় দেখিয়ে আক্রমণ করে বাড়িতে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। যাতে উৎসব হলে রাস্তায় কেউ না বেরায়, মেলায় না যায়, বিয়ের শুভযাত্রায় না বেরোয়, দুর্গাপূজা, কালী পূজা, সন্তোসী পূজা, নীল পুজো থেকে শুরু করে আমরা অন্যান্য যে পুজোতে শোভাযাত্রা বের করি সেগুলো যাতে বন্ধ হয়ে যায়। এভাবেই বন্ধ করে দেশকে বিভাজন করা হয়েছিল তাই প্রত্যেকটি উৎসবেতে ঢিলপাটকেল দিয়ে মানুষকে ভয় দেখিয়ে ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়া চেষ্টা করেছে। আমি প্রতিবাদ করছি, অনেকে হয়তো কষ্ট নিয়ে বেরিয়েছি আমি এখানে ঘোষণা করছি যদি এরকম বারবার আক্রমণ হয় হিন্দু সমাজের উপরে, আজ খালি হাতে বেরিয়েছিলাম কাল ভারতীয় জনতা পার্টির সমর্থন থাকবে এবং হিন্দুরা হাতিয়ার নিয়েই রাস্তায় বেরোবে। কারো দম থাকলে আটকাক। আমাদের বাড়িতেও অস্ত্র আছে। কারণ প্রত্যেকটি দেবী দেবতাদের হাতেই অস্ত্র আছে। অস্ত্র দিয়েই তাদের পুজো হয়। রাম এবং শ্রীকৃষ্ণ ছোটবেলা থেকেই মায়ের কোলে থাকতেই হত্যা করা শুরু করেছিল। ৬ দিন বয়সে পুতনাকে বধ করেছিল শ্রীকৃষ্ণ। আর শৈশব অবস্থা থেকেই রাক্ষসদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন তীর ধনুক দিয়ে রাম, দোষীদের দমন করার জন্য এসেছিলেন। তার ভক্ত হচ্ছি আমরা। কেউ যদি চোখ দেখিয়ে ভয় দেখিয়ে হিন্দু সমাজকে আটকে রাখবে, ঘরের মধ্যে বন্ধ করবে ভাবে  তাহলে খুব ভুল করছে।

সংখ্যালঘুদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, মুসলিম সমাজের লোকদেরকে বলছি এই পবিত্র মাসে আপনাদের মাথা ঠিক রাখুন। এই দুর্নীতিগ্রস্থ চোর ধান্দাবাজ রাজনীতিবিদ যারা আপনাদের ভরকাচ্ছে তাদের কোথায় যাবেন না। আপনাদের এই দেশে থাকতে হবে হিন্দু সমাজের সঙ্গেই থাকতে হবে।হিন্দু সমাজই আপনাদের সুরক্ষার গ্যারেন্টি। কাল ভাইপোও থাকবে না পিসিও থাকবে না। কেউ তিহারে যাবে কেউ ভুবনেশ্বরে যাবে। আপনারা কোথায় যাবেন? কে দেখবে আপনাদের কে? এই হিন্দুরাই দেখবে। তাই হিন্দু সমাজের সাথে যদি বন্ধুত্ব থাকে শান্তি থাকে তবে এরাই সুরক্ষা দেবে। না হলে ইতিহাস জানেন আপনারা মায়ানমারে কি হয়েছিল। ওখানে যারা আজ রোহিঙ্গা হয়ে লক্ষ লক্ষ সংখ্যায় বিশ্বের উদ্বাস্তু হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে তারা একসময় বাংলাদেশ থেকে মায়ানমারে গিয়েছিল। মায়ানমার বৌদ্ধদের দেশ শান্তির দেশ সেখানে আজকে বৌদ্ধ ভিক্ষুকরা পর্যন্ত তলোয়ার ধরেছে। এমন তাড়া করেছে সমুদ্র পার হয়ে নদী পার হয়ে তারা এখন মায়ানমার থেকে বাংলাদেশ ভারতবর্ষ আর কোথায় কোথায় যেন ছড়িয়ে পড়েছে। এই অত্যাচার হিংসা অপমান বেশিদিন কোথাও চলতে পারে না কোন সমাজ স্বীকার করে না। হিন্দু সমাজ শান্তিপ্রিয় ধার্মিক কিন্তু ধর্মের উপর আঘাত এলে এখানে আপনি পরশুরাম কে পাবেন নাহলে রামকেও পাবেন। তাই যারা এধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে যারা এদের কথায় নাচছে তাদেরকে আমি বলতে এসেছি আপনি হুমকি মনে করতে পারেন সাবধানবাণী মানে করতে পারেন। দিলীপ ঘোষের কিছু যায় আসেনা। আমি তরোয়াল নিয়ে দাঁড়াবো এবং এই চৌরাস্তায় মিছিল করব আগামী বছর। কেউ কিছু করতে পারবেনা। যদি আগামী বছর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাবধান না হন তার কথায় যদি কেউ বেশি নাচানাচি করে জল খাওয়ার লোক পাবেন না আমি বলে দিচ্ছি।

দিলীপ ঘোষকে তাঁর বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, যদি হিন্দু সমাজকে সুরক্ষা না দিতে পারে সরকার হিন্দু সমাজের অধিকার আছে, নিজের সুরক্ষা ঠিক করার। তার জন্য যা দরকার সেটাই করব আমরা।

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *