পাকিস্তানের এই দরকষাকষিকে স্বাভাবিক ভাবেই ভালোভাবে নেয়নি দেশের শাসকদল BJP। এবং পছন্দের তালিকায় দুই বিরোধী শাসিত রাজ্যের স্টেডিয়াম হওয়ায় আক্রমণ যেন আরও কিছুটা ঝাঁঝাল। গেরুয়া শিবিরের পক্ষ থেকে যেমন রাহুল সিনহা বলছেন, ‘পাক উগ্রপন্থীদের সমর্থক সরকারের রাজ্যে খেলার ক্ষেত্রে ওরা যে নিরাপদ মনে করবে এটা তো স্বাভাবিক’। পালটা তৃণমূলের দেবাংশু ভট্টাচার্যের কটাক্ষ, বিনা নিমন্ত্রণে পাক প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিরিয়ানি কে খেতে গিয়েছিলেন?
ঠিক কী নিয়ে বিতর্ক?
৫ অক্টোবর থেকে ভারতে অনুষ্ঠিত হবে ওয়ান ডে বিশ্বকাপ। বাবর-রিজওয়ানদের ভারতে সফর নিয়ে এখনও টানাপড়েন অব্যাহত। এর মধ্যে ICC সূত্রে পাকিস্তানের কলকাতা ও চেন্নাই ‘প্রীতি’ নিয়ে খবর প্রকাশ হয়। তা নিয়ে আলোড়িত বঙ্গ রাজনীতি।
পাকিস্তান ক্রিকেট দলের দাবিকে (সূত্র সমর্থিত) সামনে রেখে রাজ্যের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন রাহুল সিনহা। তিনি বলেন, “পাকিস্তান যেখানে নিজেদের সুরক্ষিত মনে করছে সেখানে ভারতীয়দের সুরক্ষা নেই!” তাঁর সংযোজন, “ই সরকার পাকিস্তানি উগ্রপন্থীদের সমর্থক এবং অনুপ্রবেশকারীদের পৃষ্টপোষক, বারবার একথা বলেছি আমরা। পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ইচ্ছেয় তা ফের স্পষ্ট হল।”
অন্যদিকে, বঙ্গ BJP-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “এর থেকে দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি আর কিছু হতে পারে না। পাকিস্তান ঠিক করবে ভারতের কোন শহর সুরক্ষিত আর কোন শহর নয়? একটা সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র! শুধু ঘোষণার অপেক্ষা। আমরা মনে করি এই মুহূর্তে ভারতের সর্বাধিক সুরক্ষিত জায়গা কাশ্মীর।”
পালটা জবাবে তৃণমূলের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেন, “পাকিস্তান কিন্তু চেন্নাইয়ের কথাও বলেছে। বিরোধীরা কি সেই রাজ্যের ক্ষেত্রেও একই কথা বলবে! চেন্নাই তামিলনাডুর রাজধানী। তারা হিন্দি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। খারিজ করে দিয়েছে ডবল ইঞ্জিন তত্ত্ব। বাংলা এমন একটা রাজ্য যার নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি অগাধ ভালোবাসা রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “যাঁরা পাকিস্তানের হয়ে খেলতে আসছেন তাঁরা খেলোয়াড়, উগ্রপন্থী বা সন্ত্রাসবাদী নন। সেক্ষেত্রে তো পাকিস্তানের সঙ্গে সমস্ত আলোচনা বন্ধ করে দিতে হয়! তাহলে মাঝে মধ্যে আলোচনায় বসে কেন!”
দেবাংশুর সংযোজন, “বিনা নিমন্ত্রণে পাক প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিরিয়ানি খেতে যাওয়া প্রধানমন্ত্রীকেও তো দেশের শত্রু বলতে হবে দেখছি। এসব না করে বরং অন্য কথা ভাবা উচিত। বিদেশ থেকে আসা ১০-১৫ জন মানুষ ভারতের অধিকাংশ জায়গায় সুরক্ষিত মনে করছে না, দেশের ইমেজের জন্য এটা চিন্তার। এসব এড়িয়ে হিন্দুস্থান-পাকিস্তান করলে লজ্জার কিছু নেই।”
অন্যদিকে, RSS অবশ্য এরসঙ্গে রাজনীতি টানতে নারাজ। সংগঠনের পক্ষ থেকে সুবীর রায়চৌধুরী বলেন, “খেলার সঙ্গে রাজনীতিকে অনর্থক জড়াতে আমরা রাজি নই।” RSS বিষয়টিকে বাড়তি গুরুত্ব দিতে না চাইলেও BJP নেতাদের কথায় ‘লড়কে লেঙ্গে’-র আভাস স্পষ্ট। সূত্র মারফত মেলা খবর যদি সত্যি হয় এবং ICC ও BCCI-র অনুমতি নিয়ে পাকিস্তান কলকাতায় খেলতে আসে তবে শরতের বাংলায় যে রাজনৈতিক তাপপ্রবাহ বইবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।