রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এই হেরিটেজ ওয়াকে গাইড হিসেবে এনসিসিকে ব্যবহার করতে চান। রাজভবনে এনসিসির বার্ষিক অনুষ্ঠানে এ কথা তিনি জানিয়ে দিয়েছেন। প্রসঙ্গত, গোপালকৃষ্ণ গান্ধী রাজ্যপাল থাকার সময়ে এমন প্রচেষ্টায় উদ্যোগী হয়েছিলেন। কিন্তু নিরাপত্তার জন্য শেষ পর্যন্ত তা কার্যকর হয়নি।
সিভি আনন্দ বোস রাজ্যপাল হওয়ার পরই এই নিয়ে বিশেষ উৎসাহ দেখান। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু রাজ্য সফরে এসে রাজভবনে থাকার সময়েই আনুষ্ঠানিক ভাবে সাধারণের জন্য রাজভবনকে উন্মুক্ত করার কথা ঘোষণা করে প্রতীক হিসেবে একটি চাবি রাষ্ট্রপতির হাতে তুলে দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেই উদ্যোগের সূচনা অনুষ্ঠানকে স্মরণীয় করে রাখতে রাজভবন পয়লা বৈশাখকে বেছে নিয়ে উৎসবের আয়োজন করেছে।
বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ইস্টার্ন জোনাল কালচারাল সেন্টারের শিল্পীরা এতে অংশ নেবেন। অনুষ্ঠানের লক্ষ্য হবে বঙ্গ সংস্কৃতিকে তুলে ধরা। সেখানে উপস্থিত থাকার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিশিষ্টদের।
হেরিটেজ ওয়াকের জন্য কি টিকিটের ব্যবস্থা হচ্ছে? রাজভবন এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে আমজনতার মধ্যে রাজভবনে ঘুরে দেখার আগ্রহ চিরকালের। নানা ইতিহাসের সাক্ষী এই রাজভবন ব্রিটিশরা ভারতের ভাইসরয়ের সরকারি বাসভবন হিসেবে ১৭৯৯ সালে নির্মাণ শুরু করেছিলেন। শেষ হয়েছিল ১৮০৩ সালে ১৮ জানুয়ারি। খরচ হয়েছিল ১৩ লক্ষ টাকা।
লর্ড কার্জনের পিতৃপুরুষের ভিটে কেডলেস্টান হলের আদলে নির্মিত রাজভবনের স্থপতি ছিলেন ক্যাপ্টেন চার্লস ওয়াট। ২৭ একর জুড়ে তৈরি এই রাজভবনে শুধুমাত্র ভাইসরয় নয়, তার অফিসের কর্মীদের জন্যও আবাসন রয়েছে। মূল রাজভবনের নির্মাণ অংশটি ৮৪ হাজার বর্গফুট এলাকা। লর্ড ওয়েলেসলি এখানে প্রথম থাকা শুরু করেন।
রাজভবন জুড়ে বিশাল বাগানের পাশাপাশি নানা স্থাপত্যও রয়েছে। লাটসাহেবের জন্য ঘোড়ায় টানা ফিটন গাড়ি আজও রাজভবনে পা রাখলে নজর পড়বে। থ্রোন রুম, ব্যাঙ্কোয়েট হল, বল রুম, অতিথিদের থাকার জন্য দ্য প্রিন্স অফ ওয়ালশ স্যুট, বিশাল ল্যাইব্রেরির পাশাপাশি রয়েছে ঐতিহাসিক কাউন্সিল চেম্বার। ব্রিটিশ আমলে অনেক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের সাক্ষী এই চেম্বার। যদিও নিরাপত্তার কারণে বেশ কিছু জায়গাকে হেরিটেজ ওয়াকের বাইরে রাখা হবে।
রাজভবনের এই আয়োজন দেখে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের খোঁচা, ‘বাঙালি দীঘার বদলে রাজভবনে যাবেন কিনা জানা নেই। ওঁর জনসংযোগ করার মনে হলে করবেন। কিন্তু রাজভবন জনগণের নির্বাচিত সরকারের বিরোধী-মঞ্চ হলে আপত্তি থাকবে৷’