জানা গিয়েছে, সতীঘাটা গ্রামের ১৫ বছরের সনাতন মান্ডি নামে এক কিশোর লোহার বল্লম নিয়ে কেরামতি দেখাচ্ছিল। সেই সময় হঠাৎ ওই বল্লম ঢুকে যায় তার তলপেটের বাঁদিকে । কিশোরের প্রবল চিৎকার শুনে ছুটে আসে পরিবারের সকলে । তাঁকে তড়িঘড়ি ভাড়া গাড়ি করে নিয়ে আসা হয় ঝাড়গ্রাম গর্ভমেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। চিকিৎসকরা দেখার সঙ্গে সঙ্গে অস্ত্রোপচার করার বন্দোবস্ত করে । ডাঃ বিষ্ণুপদ দে, ডাঃ সুব্রত হাজরা এই দুজন সার্জেন ও একজন অ্যানাস্থেটিক ডাক্তার সহ মোট তিনজন ডাক্তারের একটি মেডিকেল টিম তৈরি করা হয় । শুরু হয় অস্ত্রোপচার।
প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে জটিল অস্ত্রোপচারের পর তলপেট থেকে ওই বল্লম বার করেন চিকিৎসকেরা । হাসপাতালের নিয়ম অনুযায়ী, বল্লমটি ওয়ার্ড মাস্টারের কাছে জমা রয়েছে । ডাঃ সুব্রত হাজরা বলেন, “সনাতন মাণ্ডি নামে ১৫ বছরের এক কিশোরের তলপেটের বাঁদিকে একটি সাড়ে চার ফুট লম্বা লোহার বল্লমের কিছু অংশ ঢুকেছিল । মেডিকেল টিম গঠন করে দীর্ঘ আড়াই ঘন্টার অস্ত্রোপচার করা হয় । অপারেশন সাকসেসফুল হয়েছে । বল্লমটি তলপেট থেকে শুরু করে পিঠের কাজ পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল । খাদ্যনালির দু’জায়গায় ফুটো হয়েছিল তা ঠিক করা হয়েছে । বর্তমানে পেশেন্টটি সিসিইউ-তে ভর্তি রয়েছে । অবস্থা এখন স্থিতিশীল রয়েছে”।
জানা গিয়েছে, সনাতন চিল্কিগড় বিদ্যাসাগর শিক্ষায়তন হাই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র । সনাতনের বাবা এনভিএফ কর্মী । পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় কর্মরত রয়েছেন । সনাতনের বাবাও বৃহস্পতিবার রাতেই বাড়ি ফিরেছেন । তিনি বাড়িতে ছিলেন বলেই সনাতনকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে ।
কীভাবে এই বল্লম ঢুকল কিশোরের পেটে?
এই প্রসঙ্গে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বললে কিশোরের জ্যাঠা শ্যাম মাণ্ডি বলেন,” সকালে বল্লম পরিষ্কার করছিল সেই সময় হঠাৎ কোনও কারণবশত তাঁর পেটে ঢুকে যায় ওই জিনিসটি । আমরা তখন সকলেই জমিতে গিয়েছিলাম । কীভাবে বল্লমটি পেটের ভিতরে ঢুকল, সেটা সনাতন বলতে পারবে । আমরা যতদূর জানি দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে বল্লমটি সনাতনের পেটের ভেতরে ঢুকে গিয়েছে । আমরা সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতাল নিয়ে আসি এখানে অপারেশন হয়”। অপর দিক থেকে জানা গিয়েছে, আজ জামবনির জঙ্গলে আদিবাসী সমাজের শিকার উৎসব রয়েছে সেই জন্য হয়তো বল্লম বের করে তা পরিষ্কার করছিল ওই কিশোর। সেই সময় কোন কারণবশত ঢুকে গেছে তার পেটে । যদিও তার জ্যাঠা বলেন, “আমাদের পরিবারের কেউ শিকার উৎসবে যায় না” ।