Recruitment Scam : কোটি টাকার প্রতারণা তাপস-কুন্তলের সঙ্গেও! – while buying a hospital in a joint venture kuntal ghsh and tapas mondal became cheated


সোমনাথ মণ্ডল
এ যেন চোরের উপর বাটপাড়ি! নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে দু’জনেই একে অন্যের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। টাকা হাতানোর অভিযোগও তাঁরা এনেছেন পরস্পরের বিরুদ্ধে। আবার তাঁরাই বছর পাঁচেক আগে যৌথ উদ্যোগে একটি হাসপাতাল কিনতে গিয়ে প্রতারকদের খপ্পরে পড়েছিলেন! নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ও গেপ্তার হওয়া ওই দু’জন হলেন- বিএড কলেজের মালিক তাপস মণ্ডল এবং হুগলির বহিষ্কৃত তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষ।

Recruitment Scam : ‘পালের গোদা’ গোপাল, ইঙ্গিত ইডি-র চার্জশিটে
ইডি-র চার্জশিটে দু’জনের প্রতারিত হওয়ার বিষয়ে সবিস্তার উল্লেখও করা হয়েছে। চার্জশিটে বলা হয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় ওই হাসপাতাল ৪২ কোটি টাকা দিয়ে কিনতে উদ্যোগী হয়েছিলেন কুন্তল-তাপস জুটি। ইডি মনে করছে, দুর্নীতি করে হাতানো টাকাতেই হাসপাতালের ব্যবসায় নামতে চেয়েছিলেন ওই দু’জন এবং কালো টাকা সাদা করাই তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল।

কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের বক্তব্য, অযোগ্যদের চাকরি দেওয়ার বিনিময়ে টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে কুন্তল-তাপস বিভিন্ন জেলায় এজেন্ট নিয়োগ করেছিলেন। ওই এজেন্টদের মারফত পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় একটি হাসপাতালের বিষয়ে জানতে পারেন দু’জন। এর পর হাসপাতালের মাধ্যমে হিসেব-বহির্ভূত টাকা ‘সাদা’ করতে পরিকল্পনা করেন ওই জুটি।

Recruitment Scam : উড়ান সংস্থা থেকে দুর্নীতির উড়ানে কুন্তল
তদন্তে জানা গিয়েছে, এই বিষয়ে বেশ কয়েক বার কুন্তলের চিনার পার্কের ফ্ল্যাটে বৈঠকও হয়। হাসপাতাল কেনার জন্য সেটির মালিকের সঙ্গে ৪২ কোটি টাকার চুক্তি হওয়ার পর অগ্রিম হিসেবে ১ কোটি টাকা দাবি করেন জনৈক শাহ। তাপস ও কুন্তল ওই টাকা দিয়েও দেন। কিন্তু পরবর্তী ক্ষেত্রে সেই হাসপাতালের মালিকানা পাননি তাঁরা। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে পর্যন্ত ওই টাকা ফেরত পেতে দু’জন আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন।

ইডি-র চার্জশিটে দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা যাচ্ছে, তাপস মণ্ডল তাঁর একটি ‘বিশেষ ডায়েরি’-তে ওই হাসপাতাল কেনার বিষয়ে সবিস্তার তথ্য লিখে রেখেছিলেন। ওই ডায়েরির ৫৭ নম্বর পাতায় তিনি লিখেছেন, হাসপাতাল কেনার জন্য কুন্তল এবং তিনি প্রথমে ৬৭ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন পাঁশকুড়ার ওই হাসপাতালের মালিককে। তার মধ্যে ৪৬ লক্ষ দিয়েছিলেন তিনি, আর কুন্তল দিয়েছিলেন ২১ লক্ষ টাকা। এর পর তাঁরা বাকি টাকা দিয়েছেন ধাপে ধাপে। সব মিলিয়ে প্রায় ১ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল বলে ইডি সূত্রের খবর।

Recruitment Scam: নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত খোদ শিক্ষক, কুন্তলের এজেন্টের তালিকায় দিনাজপুরের সমাজকর্মীরও নাম!
তদন্তে জানা যাচ্ছে, ২০১৯ সালে হাসপাতালের মালিকের সঙ্গে তাপস ও কুন্তল চুক্তিপত্রে সই করেন। কিন্তু হাসপাতাল শেষমেশ বিক্রি হয়নি এবং তাপস-কুন্তলের প্রভাব-প্রতিপত্তির বিষয়ে জানা সত্ত্বেও ওই ব্যক্তি এখনও তাঁদের সেই টাকা ফেরত দেননি। এমনকী, যখনই তাপস ও কুন্তল লোকজন নিয়ে টাকা উদ্ধার করতে পাঁশকুড়া গিয়েছেন, সেখান থেকে তাঁদের ভাগিয়ে দেওয়া হয়েছেন!

Recruitment Scam : নজরে সরকারি অফিসাররা, সূত্র ‘মিস্টার সামন্ত’, আধিকারিকদের নাম কেস ডায়েরিতে
ইডি সূত্রের খবর, নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর হাসপাতাল কেনার বিষয়ে কুন্তল ও তাপস দু’জনেই ইডি-কে এই ব্যাপারে বয়ান দিয়েছেন। ইডি-র এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। নিয়োগ দুর্নীতির টাকা এ ভাবে আর কোথাও বিনিয়োগ করা হয়েছিল কি না, তা জানার চেষ্টা চলছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা মনে করছে, পাঁশকুড়ার ওই হাসপাতাল কেনার নেপথ্যে নিয়োগ দুর্নীতির টাকা পাচারেরই ছক ছিল তাপস-কুন্তল জুটির।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *