West Bengal BJP : ওঁরা সব কোথায়? দলের পুরনো প্রার্থীদের খুঁজছে বিজেপি নেতৃত্ব – bjp is looking for old candidates of the party ahead of panchayat election


মণিপুষ্পক সেনগুপ্ত
কোথায় তাঁরা? মিটিং-মিছিলে নেই। বুথ শক্তিশালী করার অভিযানে নেই। এমনকী, দলের অন্তর্কলহেও নেই! লোকগুলো কি বেমালুম উবে গেল রাজনীতির ময়দান থেকে? পঞ্চায়েত ভোট দরজায় কড়া নাড়ছে। ফলে, তাঁদের দরজাতেও কড়া নাড়া শুরু করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু দরজার ও পার থেকে সাড়া মিলছে না। ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরের বিজেপি প্রার্থীদের অনেকেই এখন নিষ্ক্রিয়।

Abhishek Banerjee :’…বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দেবে তৃণমূল’, পঞ্চায়েত নিয়ে দলকে ‘শাসন’ অভিষেকের
তাঁদের ঘরের বাইরে নিয়ে আসার কৌশল ঠিক করতেই বৃহস্পতিবার সল্টলেকের ইজ়েডসিসিতে বঙ্গ-বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডে। বৈঠকে ডাকা হয়েছিল সব জেলা সভাপতি, জ়োন ইন-চার্জ এবং পঞ্চায়েত ভোট পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা-নেত্রীদের। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং দলের পঞ্চায়েত নির্বাচন পরিচালন কমিটির আহ্বায়ক দেবশ্রী চৌধুরিও এ দিনের বৈঠকে ছিলেন।

Panchayat Election : পঞ্চায়েত ভোট পিছোলে জোড়া কৌশল সিপিএমের
গত পঞ্চায়েত ভোটে ব্যাপক সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠলেও হাজার পাঁচেক গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে জিতেছিল বিজেপি। বহু আসনে তৃণমূলের সঙ্গে সেয়ানে সেয়ানে টক্করও দিয়েছিলেন পদ্ম-প্রার্থীরা। কিন্তু গেরুয়া শিবির সূত্রের খবর, ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে ভরাডুবির পরে পঞ্চায়েত স্তরের ওই সব বিজেপি নেতা-নেত্রীদের অধিকাংশই বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছেন। কেউ ভিড়েছেন অন্য দলে, কেউ বা রাজনীতি-বিমুখ হয়ে ঘরের দরজায় খিল এঁটেছেন।

Udayan Guha : ‘বিরোধীরা মনোনয়ন জমা দিতে পারলে…’, অভিষেকের বার্তার পর ভোলবদল উদয়নের
এ বছর পঞ্চায়েত ভোটের আগে ২০১৮ সালের সেই ‘লড়াকু প্রার্থী’দের আবার রাজনীতির মাঠে নামাতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব। মাস খানেক আগেই মঙ্গল পাণ্ডে রাজ্য নেতাদের নিদান দিয়েছিলেন, দ্রুত মাঠে নামার বার্তা পাঠাতে হবে গত পঞ্চায়েত ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা দলীয় প্রার্থীদের সবার কাছে। বিজেপি সূত্রের খবর, মঙ্গল পাণ্ডের স্পষ্ট নির্দেশ ছিল, কাকে টিকিট দেওয়া হবে, কাকে দেওয়া হবে না, সে সব পরে ঠিক করা যাবে। কিন্তু লড়াইয়ের ময়দানে গতবারের যোদ্ধাদের অবশ্যই সঙ্গে চাই।

Abhishek Banerjee TMC: ‘এবির স্ট্র্যাটেজি: ফেয়ার ইলেকশন অ্যান্ড ক্লিন ইমেজ!’ টিকিট পাবেন? ফিসফাস নেতাদের
সূত্রের খবর, সেই লক্ষ্যে বেশিদূর এগোতে পারেনি রাজ্য বিজেপি। দলের এক বর্ষীয়ান নেতার কথায়, ‘গত পঞ্চায়েতে ভোটে দলীয় প্রার্থীদের অনেকেই এখন নিষ্ক্রিয়। যাঁরা জিতেছিলেন, তাঁদের একাংশ আবার তৃণমূলের সঙ্গে আর সংঘাত যেতে চাইছেন না। কিন্তু মঙ্গল পাণ্ডেরা চাইছেন গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের দলীয় প্রার্থীদের পুরোনো ফর্মে ফেরাতে। অথচ বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তা আর কিছুতেই সম্ভব নয়।’

জলপাইগুড়ি জেলার এক বিজেপি পদাধিকারীর ব্যাখ্যায়, ‘২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটে আমাদের কর্মী এবং প্রার্থীদের মধ্যে যে জোশ ছিল, তার সিকি ভাগও এ বার নেই। তখন পরিবর্তনের স্বপ্ন ছিল সবার চোখে। এ বার সেটা উধাও। আমাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, গত পঞ্চায়েত ভোটের গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরের বিজেপি প্রার্থীদের খুঁজে বার করে মাঠে নামাতে হবে। কঠিন টাস্ক। কিন্তু চেষ্টা চলছে।’

Abhishek Banerjee: ২০১৮-র পুনরাবৃত্তি নয়, গোষ্ঠী কোন্দলে কোচবিহারের দুই বড় নেতার ‘চাকরি নট’-এর হুঁশিয়ারি অভিষেকের
গত এক মাস ধরে রাজ্য জুড়ে ‘বুথ সশক্তিকরণ অভিযান’ চালাচ্ছে বিজেপি। সেখানেও একই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদের। রাজ্যের এমন অনেক বুথ রয়েছে, যেখানে বিজেপির সংগঠন পুরোপুরি নির্ভরশীল ছিল গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের দলীয় প্রার্থীর উপর। কিন্তু তাঁদের অনেকেই ইদানীং নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ার কারণে ওই সব বুথ থেকে খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে বিজেপি নেতাদের।

Abhishek Banerjee : ভোটে কেন্দ্রের বঞ্চনাই দলের ইস্যু: অভিষেক
এই প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘দলীয় সংগঠনের প্রকৃত অবস্থা কী, সেটা বিজেপি ভালো ভাবেই জানে। বিজেপি ঐকব্যদ্ধ ভাবে লড়াই করবে। পঞ্চায়েত ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হলে একটি জেলা পরিষদও তৃণমূল পাবে না।’

তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেনের কটাক্ষ, ‘বিজেপির নিষ্ক্রিয় নেতা-কর্মীরা সক্রিয় হয়ে উঠলেও পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৭৫ শতাংশ আসনে ওরা প্রার্থী খুঁজে পাবে না।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *