সূত্রের খবর, পাঁচটি মামলায় জমা দেওয়া একাধিক চার্জশিটে ২৩-২৪ জনকে অভিযুক্ত হিসেবে দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে ডজন খানেকের বেশি অভিযুক্তকে সিবিআই গ্রেপ্তার করেনি বলে পার্থর আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী-সহ বাকি অভিযুক্তদের আইনজীবীর দাবি। নবম-দশমের চার্জশিটে নাম থাকা একাধিক অভিযুক্তকে ধরা হয়নি, গ্রুপ-সিতে ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হলেও গ্রেপ্তার হয়েছেন ৫-৬ জন।
সম্প্রতি আদালতে পার্থর আইনজীবী একাধিক বার এমন একাধিক জনের নাম ধরে সওয়াল করেছেন, যাঁদের নাম অভিযুক্তদের তালিকায় থাকলেও গ্রেপ্তার করা হয়নি। এর মধ্যে তিনি সবচেয়ে বেশি আলোচনা করেছেন এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারপার্সন ও বর্তমানে হাওড়ার একটি কলেজের অধ্যক্ষ সৌমিত্র সরকারকে নিয়ে।
বেহালার একটি কলেজের অধ্যক্ষা এবং এসএসসি-র এক মহিলা আধিকারিকের প্রসঙ্গও তোলেন তিনি। বিপ্লবের কথায়, ‘সৌমিত্র-সহ বাকিদের নাম মহামান্য কলকাতা হাইকোর্ট গঠিত বাগ কমিটির রিপোর্টে ছিল। তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করে তদন্তের সুপারিশও করা হয়েছিল। প্রায় প্রতিটি মামলায় চার্জশিটে সৌমিত্রবাবুর নাম সিবিআই অভিযুক্ত হিসেবে দিয়েছে।
কিন্তু গ্রেপ্তার করছে না কেন?’ এ প্রসঙ্গে ফোনে সৌমিত্রর দাবি, ‘আমি জ্ঞানত কোনও অন্যায় করিনি। ব্যক্তিগত ভাবে টাকা তুলিনি। মা মারা যাওয়ার সময়ে আমার অনুপস্থিতিতে অনেক অন্যায় কাজ হয়েছে। এমনকী আমি ছেড়ে আসার পরও ব্যাক ডেটে আমার নাম করে অন্যায় হয়েছে। সিবিআই আমাকে একাধিক বার ডেকেছে, সব বলেছি।’
কিন্তু কেন এই পৃথক পথ? সিবিআইয়ের সূত্রে এর দু’টি ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। প্রথমত এই মামলাগুলিতে এখনও যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়নি, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত দুর্নীতির প্রমাণ এখনও মেলেনি। এঁদের বেশিরভাগই পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলেন। গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রের দাবি, নিয়োগ দুর্নীতির মাথারা নিজেদের ক্ষমতা ব্যবহার করে এঁদের অনেককে দুর্নীতিতে যোগ দিতে বাধ্য করেছিলেন।
তা সত্ত্বেও এঁরা ব্যক্তিগত কোনও সুবিধে, টাকা তোলা, সম্পত্তি বানানোর কাজে যুক্ত হননি। দ্বিতীয়ত, এঁদের মধ্যে বেশ ক’জনের বয়ান বা সাক্ষ্য এই মামলায় গোয়েন্দাদের ‘তুরুপের তাস’। তাঁদের দেওয়া সাক্ষ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে বেশ কিছু রাঘববোয়ালকে জালে ফাঁসানো হয়েছে। বাকিদের ধরতে টোপ ফেলা হয়েছে। ফলে এখনই জরুরি ভিত্তিতে এঁদের গ্রেপ্তারির প্রয়োজন আছে বলে মনে করছে না সিবিআই।
যদিও ধৃত এজেন্ট প্রসন্ন রায় ও প্রদীপ সিংয়ের আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতার বক্তব্য, ‘সিবিআই তো বিচারক নয়। তারা এ ভাবে ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট দিচ্ছে কী ভাবে? সিবিআইয়ের কাজ দুর্নীতি হলে গ্রেপ্তার করা। বিচারের দায়িত্ব আদালতের উপরে ছাড়াই ভালো।’