সেই থেকেই হয়ে আসছে এই মশলা মেলা। উদ্দেশ্য ছিল কৃষকরা বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে তাদের জমির উৎপাদিত ফসল বিক্রি করবেন এবং ফসল বিক্রি করে জমিদারের খাজনা মিটিয়ে যাবেন। সেই উদ্দেশ্য নিয়েই সূচনা হয়েছিল এই মেলার। নাম দেওয়া হয়েছিল গোষ্ঠ বিহার মশলা মেলা। আজ অবশ্য জমিদারি প্রথার অবলুপ্তি ঘটেছে। নেই কৃষকদের খাজনা দেওয়ার নিয়মও। তবুও ঐতিহ্য মেনে মেলা চলে আসছে ২০১ বছর ধরে। ২০২৩ সালে এসে এই মশলা মেলা পা দিল ২০১ বছরে।
পয়লা বৈশাখের প্রথম দিন ভোর তিনটে থেকে শুরু হয় বেচাকেনা। আজও বহুদূর থেকে কৃষকরা তাদের জমির উৎপাদিত ফসল নিয়ে আসেন বিক্রি করার জন্য। আবার রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু ক্রেতারা আসেন কৃষকদের কাছ থেকে মশলা কিনতে। বছরের প্রথম দিন পাইকারি বেচাকেনা হলেও পরবর্তীতে আরও ১৫ দিন ধরে চলে খুচরো মশলার হাট।
এই মেলায় মশলা কিনতে এসে হাসনাবাদ এলাকার এক ব্যবসায়ী জানান, “যেদিন থেকে প্রথম ব্যবসা শুরু করেছি, প্রত্যেক বছর এই দিনটাতে এই মেলায় আসি। মোটামুটি ৬ মাসের জন্য মশলা এখান থেকেই কিনে নিয়ে যাই”। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের কৃষকরা তাদের চাষ করা বিভিন্ন মশলা নিয়ে এখানে আসেন। সাত দিন ধরে চলে এই মেলা।
ধারাবাহিকভাবে চলছে প্রথম থেকেই। চাষিরা যাতে এক জায়গায় বসে সব বিক্রি করতে পারেন সেই কথা মাথায় রেখেই জমিদার খেলারাম মুখোপাধ্যায় পয়লা বৈশাখের দিনে এই মশলা মেলার ব্যবস্থা করেছিলেন। সাধারণ মানুষ থেকে ব্যবসায়ী প্রত্যেকেই এই মেলা থেকে মশলা কিনে নিয়ে গিয়ে সারা বছরের জন্য সঞ্চয় করে রাখেন। সেই মতো আজ শনিবার সকাল থেকেই মশলা মেলায় ভিড় চোখে পড়ল।
ধোনে জিরা লঙ্কা সহ অন্যান্য সব মশলাই পাওয়া যায় এই মেলাতে। মশলা মেলার পাশাপাশি সাত দিন ধরেই চলবে মানুষের বিনোদনের জন্য বিনোদন মেলা। সেখানে নাগরদোলা থেকে শুরু করে খাওয়া দাওয়া সমস্ত কিছুই ব্যবস্থা রয়েছে। গোবরডাঙ্গার এই ঐতিহ্যবাহী মেলা দেখতে দূর দিগন্ত থেকে মানুষ ভিড় করেন।