পয়লা বৈশাখের দিন সকাল থেকেই ধরনামঞ্চে বাকি দিনগুলির মতো চলে স্লোগান, বিক্ষোভ। এদিন ৭৬০ দিনে পড়ল তাঁদের বিক্ষোভ। মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির নীচে লক্ষ্মী-গণেশ পুজোর আয়োজন করেন চাকরিপ্রার্থীরা। প্রতীকী পুজো করা হয়। আন্দোলনকারীরা জানান, সিদ্ধিদাতা গণেশের কাছে দুঃখ দুর্দশা ঘোচানোর জন্য প্রার্থনা করেন আন্দোলনকারীরা। অভিনব এই প্রতিবাদে সামিল হয়ে চাকরিপ্রার্থীরা বলেন, “যেখানে নতুন বছরের প্রথমদিন পরিবারের সঙ্গে কাটানোর কথা। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে আমরা রাস্তায়। আজ তাই সিদ্ধিদাতা গণেশ পুজোর মাধ্যমে আমরা সরকারের ঘুম ভাঙাতে চাই।”
চাকরিপ্রার্থীদের এই আন্তলোন মঞ্চ যেন উৎসবের এক উলটো দিক। না আছে নতুন বছরের আনন্দ, না আছে পরিবারের হাতে নতুন জামা তুলে দেওয়ার সুযোগ। ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যেও চাকরির দাবিতে অবস্থানে অনড় চাকরিপ্রার্থীরা। আদালতের নির্দেশ মতো সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ধরনা চালিয়ে যাবেন আন্দোলরকারীরা। প্রখর রোদে, গরমে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তবে মনের জোর তাঁদের অটুট। এর মধ্যেই যারা পবিত্র রমজান মাসের জন্য রোজা রেখেছেন, তাঁদের শারীরিক অবস্থাও কমজোর হয়ে পড়ছে। তবে হকের দাবি নিয়ে চলা আন্দোলন থেকে পিছু হটতে নারাজ তাঁরা।
আন্দোলনকারী এক মুসলিম চাকরিপ্রার্থী বলেন, “রোজা রেখেছি বলে জলও খাচ্ছি না সারা দিন। অনেকেই রোদে বসে রয়েছে। যতই কষ্ট হোক ধরনা তুলে নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।” আন্দোলনরত অপর এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, “ফুটপাতের ধারে বসে থাকতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। একটু পরপরই আগুনের হলকার মতো হাওয়া আসছে তবুই এ লড়াই চলবেই।”
একদিকে গান্ধী মূর্তির নীচে ধরনায় বসে রয়েছেন নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীরা। অন্যদিকে, মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে ধরনা চালাচ্ছেন উচ্চ প্ৰাথমিক, প্রাথমিক, গ্রুপ ডি, গ্রুপ সি এবং নতুন করে স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষার দাবি জানানো চাকরিপ্রার্থীরা। গান্ধী মূর্তি ও মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির নীচে স্কুল সার্ভিস কমিশনের মেধা তালিকায় নিয়োগ না পাওয়া প্রার্থী থেকে শুরু করে সরকারের চতুর্থ শ্রেণির চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন চলছে।
