এই ব্লক এলাকার একটা বড় অংশের মানুষ মূলত মরশুমি সবজি সহ অন্যান্য চাষাবাদ করেই জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু এবার বাধ সাধল প্রকৃতি। চড়া রোদ, সঙ্গে তীব্র গরম। ফলে জলের অভাবে ফসল মাঠেই শুকোচ্ছে। ঋণ নিয়ে, ধার করে চাষ করা ঝিঙ্গে, করলা, লাউ, শশা সহ অন্যান্য মরশুমি শাক সবজি বিক্রি করে সেই ধার শোধের আশা এখন বিশবাঁও জলে।
এখন সে টাকা শোধ দেবেন কী করে, তা নিয়েই চিন্তায় রয়েছেন এই এলাকার কৃষকরা। স্থানীয় কৃষক স্বপন দে বলেন, “প্রচণ্ড গরমে সবজির গাছগুলি টিকিয়ে রাখাই মুশকিল হয়ে পড়েছে। জ্বালানী তেলের যা দাম তাতে পর্যাপ্ত সেচের ব্যবস্থা করতে গিয়েও হিমহিম অবস্থা হচ্ছে। কিন্তু এত সবের পরেও উৎপাদিত সবজির দাম নেই, যা লাভ ঘরে তোলার ফড়েরাই তুলে নিচ্ছে।”
অন্য এক কৃষক তরনী নন্দী বলেন, “বেশ অনেকদিন হয়ে গেল বৃষ্টির দেখা নেই। আর এই ধরনের সবজি বৃষ্টি ছাড়া ঠিকঠাকভাবে ফলন হয়না। বেশ অনেক বছর পরে এমন একটি এপ্রিল মাস দেখছি, যখন অনেকদিন ধরে বৃষ্টি পড়ছে না। এতে চাষের খুব ক্ষতি হচ্ছে। ঋণ মেটানো সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
এদিকে জেলা উদ্যান পালন দফতরের ফিল্ড অফিসার সঞ্জয় সেনগুপ্ত বলেন, “চলতি দাবদাহে সবচেয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন সবজি চাষিরা। এই অবস্থায় চাষিদের প্রতি পরামর্শ রইল, সূর্যাস্তের পর চাষের জমিতে সেচের জল দিন। কোনোভাবেই দিনের বেলায় তা করা চলবে না। রোদে ঝলসে যাওয়া গাছগুলিকে কিভাবে ফের সতেজ করা যায় সে বিষয়ে তালডাংরা ফার্মে গবেষণা চলছে।”
এখনও পর্যন্ত এই জেলায় ঠিক কি পরিমাণ সবজির ক্ষতি হয়েছে সেই তথ্য হাতে আসেনি বলেও তিনি জানান। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,গ্রীষ্মের প্রবল দাবদাহে বাঁকুড়া জেলার তাপমাত্রা প্রায় ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়ে ফেলেছে। সকাল ৯টার পর থেকেই বাইরে বেরোচ্ছেন না মানুষ। খুব দরকার ছাড়া কাউকেই বাইরে দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু কৃষকদের এই চড়া রোদেও যেতে হচ্ছে ক্ষেতে। এক পশলা বৃষ্টির আশায় বসে আছেন তাঁরা।