Jiban Krishna Saha : জীবনখাতার প্রতি পাতায় দুর্নীতিরই হিসাবনিকাশ – jiban krishna saha also involved in cow smuggling case with ssc scam


এই সময়, কলকাতা ও বড়ঞা:প্রাথমিকের শিক্ষক থেকে মুর্শিদাবাদ জেলার বিধায়ক-স্বপ্নের এই উত্থানের মাঝে কী গোরু পাচারেও যুক্ত হয়ে পড়েছিলেন তৃণমূল জীবনকৃষ্ণ সাহা? সিবিআই তাঁকে স্কুলে নবম-দশমের শিক্ষক নিয়োগ মামলায় গ্রেপ্তার করলেও গোরু পাচার মামলার কয়েকজন সাক্ষীর বয়ানে তেমনই ইঙ্গিত পাচ্ছেন তদন্তকারীরা। সিবিআই সূত্রের খবর, এই সাক্ষীদের মধ্যে অন্যতম হলেন বীরভূম জেলার তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের প্রাক্তন দেহরক্ষী সেহগল হোসেন।

গোরু পাচার মামলায় এই দু’জনেই বর্তমানে তিহার জেলে বন্দি রয়েছেন। তদন্তকারীদের দাবি, সেহগলের সঙ্গে ভালোই যোগাযোগ ছিল জীবনকৃষ্ণের। কী কারণে তাঁর সঙ্গে এত ঘনিষ্ঠতা হয়েছিল, অনুব্রতর কথায় সীমান্ত পার করে গোরু পাচারে জীবন সাহায্য করতেন কি না, তা খতিয়ে দেখা শুরু করেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।

Jiban Krishna Saha: জীবনকৃষ্ণ সাহার মোবাইলের সন্ধানে এবার পাঁকে তৃণমূলের বুথ সভাপতি!
২০০৪ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন জীবনকৃষ্ণ সাহা। তারপর বীরভূমের নানুরের দেবগ্রাম হাইস্কুলে যোগ দেন ২০১৬ সালে। বাবা বিশ্বনাথ সাহার বীরভূমের সাঁইথিয়ায় তেল মিল এবং কোল্ড স্টোরেজও দেখাশোনা করতেন তিনি। যদিও বাবাকে সরিয়ে পরবর্তী ক্ষেত্রে ব্যবসার ‘কন্ট্রোল’ নেন জীবন।

কান্দি মহকুমায় রেশনের চাল সরবরাহের ব্যবসাও নিজের দখলে নেওয়ার চেষ্টা করেন জীবন। কলেজ জীবন থেকেই জীবনকৃষ্ণ তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অনুব্রতর অনুগত হিসেবেই পরিচিত ছিলেন এলাকায়। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের বিজেপি প্রার্থী অমিয় দাসকে ২৭৫৩ ভোটে পরাজিত করার পর জীবনকৃষ্ণ সাহার আরও প্রতিপত্তি বাড়তে থাকে।

ভোটের টিকিট পাওয়ার নেপথ্যেও নাকি অনুব্রতরই হাতযশ ছিল। অভিযোগ, তা হয়েছিল অনুব্রতর নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালনের কারণেই। মুর্শিদাবাদের রানিনগর ২ নম্বর ব্লকের শেখপাড়া, কাহারপাড়ার উপর দিয়ে পদ্মা নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে গোরু পাচারের চক্রের সঙ্গে তাঁর যোগ ছিল কি না, তা সিবিআই খতিয়ে দেখছে। নিয়োগ দুর্নীতি এবং গোরু পাচারের টাকায় তিনি সম্পত্তি কিনেছেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Jiban Krishna Saha: পুকুর ছেঁচে অবশেষে সিদ্ধিলাভ, ৬৬ ঘণ্টা পর উদ্ধার জীবনের দ্বিতীয় মোবাইল
সিবিআই এবং স্থানীয় সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদ এবং বীরভূম জেলায় বহু টাকার সম্পত্তি রয়েছে জীবনের। বড়ঞার একাধিক পার্টি অফিস, ধানমান্ডির কাছে ২৭ কাঠা জমি রয়েছে তাঁর নামে। শুধু তাই নয়, ২০১৮-২০২২ সালের মধ্যে নিজের নামে কয়েক কোটি টাকার জমি কিনেছেন তিনি। বীরভূম পুরসভা এলাকায় সাড়ে পাঁচ কাঠা, শান্তিনিকেতনে চার কাঠা, সাঁইথিয়া পুরসভা এলাকা মিলিয়ে প্রায় ২৪ কাঠা জমিও রয়েছে তাঁর।

সিবিআই সূত্রের খবর, বিধায়কের তেল কল, রাইস মিল, কোল্ড স্টোরেজ ছাড়াও একাধিক ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। ওই সমস্ত সম্পত্তির বেশ কিছু নথিপত্র তদন্তকারীদের হাতে এসেছে। বড়ঞার ধানমান্ডির বাসিন্দা উত্তম মাহারা সোমবার বলেন, “এই এলাকায় ২৭ কাঠা জায়গা বিধায়কের কেনা রয়েছে। মাস তিনেক ধরে এই জায়গায় ধান কেনার মান্ডি চলে। মাঝে মধ্যেই বিধায়ক এই এলাকায় আসতেন। সকলের সঙ্গে খুব ভালো ব্যবহার করতেন।”

Jiban Krishna Saha TMC MLA: বাবাকে জেল খাটানোর হুমকি! ছেলে জীবনকৃষ্ণ গ্রেফতার হতেই স্বস্তিতে বাবা বিশ্বনাথ
এক দোকানদার অপূর্ব সরকার বলেন, “আমি বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার থেকে এই দোকানঘর ভাড়া নিয়েছি। তিনি কোনও দিন ভাড়া নেওয়ার জন্য চাপ দেননি। খুব সামান্য টাকাই ভাড়া হিসেবে আমি দিতাম।” বড়ঞায় তৃণমূলের যে পার্টি অফিস রয়েছে, সেই বাড়িও জীবনকৃষ্ণ সাহার কেনা। এই নিয়ে বড়ঞা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি রবীনকুমার ঘোষ বলেন, “অনুমতি নিয়েই আইনিভাবে এই বাড়ি কিনে দলীয় অফিস তৈরি করা হয়েছে।”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *