সোমবার নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবনে কেন্দ্রের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের উদ্যোগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পঞ্চায়েতের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেরা পারফরম্যান্সের নিরিখে রাজ্যগুলিকে পুরস্কৃত করেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু৷ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী গিরিরাজ সিং এবং প্রতিমন্ত্রী স্বাধীন নিরঞ্জন জ্যোতিও৷ এই অনুষ্ঠানেই উল্লেখযোগ্য ভাবে পুরোপুরি ব্রাত্য থেকে গেল বাংলা৷
পুরস্কার প্রাপকদের তালিকায় কোনও খাতেই নাম নেই পশ্চিমবঙ্গের। তালিকার সিংহভাগ দখল করল বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিই৷ রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন, ১০০ দিনের কাজ বা আবাস যোজনা প্রকল্পের বকেয়া টাকা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য টানাপড়েন যখন তুঙ্গে, তখন বাংলার নাম পুরস্কার প্রাপকদের তালিকায় না-থাকার মধ্যে কি অন্য কিছু রয়েছে?
এদিনও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের প্রাপ্য নিয়ে সরব হয়েছেন। তিনি নবান্নে বলেন, “১০০ দিনের কাজের লোকেদের পর্যন্ত টাকা দিচ্ছে না। বিজেপির অনেক লোকই আমাদের বলেছে, ২০২৪ পর্যন্ত আমরা বাংলাকে টাকা দেবো না। কেননা,তখন লোকসভা নির্বাচন! এ সব কী? এটা আমাদের প্রাথমিক অধিকার। এটা জনাদেশ। এটা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। এটা সরকারের কর্তব্য।”
তাঁর সংযোজন, “ওরা পশ্চিমবঙ্গ থেকে জিএসটি সংগ্রহ করে। ওরা সব কর নেয়। রাজ্য সরকারের অধিকার নেই? অথচ আমাদের শেয়ার দেয় না।” বাংলার কপালে কোনও পুরস্কার না-জোটায় রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার সরাসরি কেন্দ্রকেই নিশানা করেছেন৷
তাঁর দাবি, “২০১৪ সালে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরের বছর থেকেই একাধিকবার পঞ্চায়েত প্রকল্পে আমাদের রাজ্য সারা দেশের মধ্যে সেরা হয়েছে৷ এটা আমরা কোনওভাবেই বিশ্বাস করতে রাজি নই যে খারাপ পারফরম্যান্সের কারণে রাজ্য পুরস্কার থেকে বঞ্চিত হয়েছে৷ আসলে পুরোটাই ঘৃণ্য রাজনৈতিক চক্রান্ত মাত্র৷ মোদী সরকারের লজ্জাজনক দ্বিচারিতার নিদর্শন গোটা দেশ দেখছে৷”
উল্লেখ্য, বিগত বাজেট অধিবেশনের শেষ পর্বেতৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরনেতৃত্বে রাজ্যে ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকার দাবিতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকে দরবার করে জোড়াফুলের সংসদীয় প্রতিনিধি দল৷ রাজ্যের পাওনার দাবিতে ধর্নায় বসেছিলেন মমতাও। চলতি বছরের সেরা পঞ্চায়েত পারফর্মার রাজ্যগুলির তালিকা প্রকাশ করা হয় ৭ এপ্রিল৷ দু’টি ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র খুব স্পষ্ট বলে অভিযোগ তৃণমূল শিবিরের৷