Trending News: ‘বোঝোই তো বাবু অনেক চাপ’! অকালেই বিদায়, আর মিলবে না মিঠুদার ফুচকা – mysterious death of barasat popular phuchka seller locals feeling sad for him


বারাসাতে তার হাতের ফুচকা খাননি এমন মানুষ কমই আছেন। ফুচকা বিক্রি করেই আট থেকে আশি সকলের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন। বিকেল হলেই নিজের ভ্যানে সংসার গুছিয়ে পান মুখে পৌঁছে যেতেন নির্দিষ্ট গন্তব্যে। স্কুলের ছুটি থেকে সিনেমার শো শেষে হোক পাগলপারা ভিড় জমত তাঁর স্টলের সামনে। বারাসাতের সুপরিচিত ছায়াবাণী সিনেমা হলের সামনেই এত বছর ধরে তাঁর রকমারি স্বাদের পসরা।সাধারণ তেঁতুল জলের ফুচকা ছাড়াও চাটনি ফুচকা, দই ফুচকা, রকমারি চাট, গন্ধরাজ লেবুর ফুচকা আরও কত কি। ফুচকা খাওয়া শেষে, তেঁতুল গোলা জলের আবদার পূরণ করতেন সকলের সুপরিচিত মিঠুদা। সকল বয়সের মানুষের কাছেই তিনি ছিলেন মিঠুদা নামেই পরিচিত। তবে তার আসল নাম, মিঠু সিং। বয়স ৫২ কোঠায়। বারাসাত জুড়ে মিঠুদার ফুচকার নাম ডাকছিল এক কথায়। কিন্তু, আর মিলবে না এই মিঠুদার ফুচকা।

Phuchka: হাঁ করলেই সোজা মুখে, আলু ভরে টক জলে চুবিয়ে মেশিন দেবে মুচমুচে ফুচকা!

সন্ধ্যে থেকে তার চারপাশের ভিড় যেন ছিল নিত্য সঙ্গী। তার হাতের ফুচকায় রীতিমতো জল ঝরতো জিভে। যখন একদল ফুচকা খাওয়ার লাইনে দাঁড়িয়ে গপাগপ খাচ্ছে ফুচকা, তখন আর একদল তৈরি হয়ে থাকতো ফুচকা খাবার জন্য। গন্ধ লেবু তেঁতুল মাখার গন্ধে আলাদা আমেজ তৈরি হতো মৌচাক চত্বরে। বাড়িতে বন্ধু-বান্ধব অতিথি আসলে মিঠুদার ফুচকা খাওয়ানো যেন বারাসাত বাসীদের কাছে এক আলাদা গুরুত্ব পেত। কে কীরকম ঝাল খাবে শুনে প্রতি রাউন্ডে চেঞ্জ হত আলু মাখা। জব্বর ঝাল মশলা দেওয়া এক স্পেশাল ফুচকা। মিঠুদার হাতের তৈরি গন্ধ লেবু দিয়ে তেঁতুল গোলা জলেও ছিল অপূর্ব স্বাদ। শেষে ফ্রি হিসেবে থাকত স্পেশাল ছোলা বাদাম দেওয়া ফুচকাও।

Bangladeshi Street Food : মাত্র ২০ টাকায় অমৃত! দেদার বিকোচ্ছে লেবুর পিনিক

কে নেই সেই ফুচকা খাওয়ার ভিড়ে! প্রেমিক প্রেমিকা, বন্ধু বান্ধবী, নব বিবাহিত দম্পতি, ছেলে মেয়ে, দাদু দিদা, কাকু কাকিমা সকলে। আর সকলের সেই ভিড় ছিল এই একজনকে ঘিরেই, মিঠু দা। কিছুদিন আগেই দোকানের জায়গা সামান্য পরিবর্তন হয় তার। বিষয়টি নিয়ে কৌতুহলীরা জিজ্ঞাসা করলে মিঠুদা বলেন, ‘বোঝোই তো বাবু, বিভিন্ন রকমের চাপ।’

Serampore Special Kulfi : গরমে শরীর ঠাণ্ডা করতে শ্রীরামপুরে দাপাচ্ছে স্পেশাল কুলফি, মজে আট থেকে আশি

রমরমিয়ে চলা এই ব্যবসায় কিছুদিন হল জৌলুসহীন হয়ে পড়ছিলেন মিঠুদা। বাজারে অনেকটাই হয়ে গিয়েছিল ধার বাকি বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিক ছন্দে চলছিল ব্যবসা, কিন্তু হঠাৎই ঘটল ছন্দপতন। আত্মহত্যা করলেন সকলের প্রিয় পরিচিত মিঠুদা। আর মিলবে না লোভনীয় তার হাতের ফুচকা। মন খারাপ বারাসাতবাসীদের।

Pice Hotel: পর্দা থেকে বাস্তবে, ইন্দুবালার প্রতিচ্ছবি শ্রীরামপুরের শ্রীকৃষ্ণ ভাতের হোটেল

সোশ্যাল মিডিয়ায় এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই, রীতিমতো আবেগে ভেঙে পড়েছেন বারাসাতের নেটাগরিকরা। নানা স্মৃতির কথা তুলে ধরার পাশাপাশি অনেকেই করছেন দুঃখ প্রকাশ। কিন্তু স্থানীয় কিছু পরিচিত মানুষদের কাছে আক্ষেপের সুরে বলা সেই কথাই যেন বারংবার উঠে আসছে মিঠুদার স্মরণে, ‘বোঝোই তো বাবু, অনেক চাপ।’ ফুচকা খাওয়ার জন্য আর হয়তো ভিড় জমবে না পরিচিত এই দোকানে। সকলেই এখন বলছেন ভালো থেকো মিঠুদা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *