নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে চাপ বাড়ল তৃণমূলে! নিজাম প্যালেসে ডাক পড়ল পার্থ ঘনিষ্ঠ নেতা শাজাহানের


বিক্রম দাস ও প্রসেনজিত সরদার: পঞ্চায়েত ভোটের আগে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে শাসকদলের উপরে চাপ বাড়ছে হু হু করে। বড়ঞার বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। সাঁইথিয়া পুরসভা এক কাউন্সিলের নাম উঠে আসছে নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে। নদিয়ার এক বিধায়ক দলেরই এক নেতার বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙ্গড় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা ভাঙ্গড়-১ নম্বর ব্লক সভাপতি শাজাহান মোল্লাকে তলব করল সিবিআই।

আরও পড়ুন-গুজরাটে নারদা গাম হিংসায় বেকসুর খালাস ৬৮ অভিযুক্ত

কেন তলব শাজাহান মোল্লাকে? জানা যাচ্ছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও এসএসসির প্রক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহার অত্য়ন্ত ঘনিষ্ঠ শাজাহান। এমনটাই দাবি তদন্তকারীদের। ফলে তাঁর কাছে থেকে নিয়োগ দুর্নীতির কিছু তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলেই মনে করছেনব তদন্তকারীরা। ফলে আরও একদফা চাপ বাড়ল তৃণমূল কংগ্রেসের উপরে। শুক্রবার শাজাহানকে সিবিআই দফতরে যেতে বলা হয়েছে।

নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অভিযুক্ত বড়ঞার বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহাতে আজ ফের আদালতে তুলে হেফাজতে চাইতে পারে সিবিআই। তাঁর বিপুল সম্পত্তি সঙ্গে তাঁর আয়ের হিসেব মিলিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা। এখন জীবন কৃষ্ণ মুখ খুললে তা হয়তো অনেক জেলা নেতার বিড়ম্বনার কারণ হয়ে পড়বে। ফলে চাপ বাড়ছে জেলা সংগঠনে। জীবনকৃষ্ণ সাহার গ্রেফতারের পর এবার সিবিআইয়ের স্ক্যানারে তৃণমূল বিধায়ক ও তাঁর স্ত্রী টগরী সাহার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও সম্পত্তি। সূত্রের খবর, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ও বেসরকারি মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ১২টি অ্যাকাউন্টের হদিস মিলেছে। এর মধ্যে বিধায়কের নামে ৪টি ও তাঁর স্ত্রীর নামে ৩টি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। 

এই অ্যাকাউন্টগুলিতে কত টাকা রয়েছে এবং লেনদেন সংক্রান্ত যাবতীয় নথি ব্যাঙ্কের কাছে চেয়ে পাঠিয়েছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, শুধু মুর্শিদাবাদ নয়, বীরভূমেও জীবনকৃষ্ণের অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সূত্রের খবর, বীরভূমের সাঁইথিয়া, তালতোড়, তাতারপুর, বাঁধগোড়া ছাড়াও মুর্শিদাবাদের আন্দিতে বিধায়ক ও তাঁর স্ত্রীর নামে একাধিক সম্পত্তি রয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ৮-১০ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে সিবিআইয়ের নজরে বড়ঞার তৃণমূল বিধায়কের সম্পত্তি।  

এদিকে, গতকালই নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে বেরিয়ে এল আরও এক গুরুতর অভিযোগ। নদিয়া জেলা পরিষদ সদস্য টিনা সাহার ভৌমিকের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা। অভিযোগ,অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে টাকা তুলেছেন টিনা সাহা ভৌমিক। গোটা বিষয়টি যেদিন জানতে পারা যাবে সেদিন দলের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।

নিয়োগ দুর্নীতিকে সিবিআইয়ের স্ক্যানারে রয়েছেন তৃণমূলের তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহা। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে এবং সুমিত বলে দায়িত্বে রয়েছে আমাদের একটি ছেলে। এদের নাম করে কোটি কোটি টাকা তুলেছেন টিনা সাহা ভৌমিক। যেদিন দল জানতে পারেব এই মেয়েটি এরকম সেদিন দলের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। ওদের ভাঙিয়ে খাচ্ছে টিনা। গোটা বিষয়টি নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কাছ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারিনি।

উল্লেখ্য, এর আগেও একাধিক বার টিনা সাহা ভৌমিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন তাপস সাহা। তাঁর দাবি তাঁকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে। টিনা জন্ম সার্টিফিকেট নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাপসবাবু। গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় থেকেই তাপস সাহা ও টিনা সাহা ভৌমিকের মধ্যে রাজনৈতিক মতবিরোধ সামনে চলে আসে। এতদিন তার কাদা ছোড়াছুঁড়ির পর্যায়ে চলে গিয়েছে। 

মারাত্মক ওই অভিযোগ নিয়ে নদিয়া জেলা পরিষদ সদস্য টিনা সাহা ভৌমিক বলেন, এতো উল্টা চোর কোতওয়ালকে ডাঁটে। যার নামে সিবিআই হল, যাঁকে প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে আদালতে তোলা হল তিনি বলছেন অন্যজনের নামে। অন্য কাউকে এতবড় কথা কাউকে বলতে শুনেছেন? উনি একমাত্র ব্যক্তি যিনি আমার নামে ক্রমাগত কুত্সা করছেন। একবার মার্ডার কেসে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল, একবার আমার নামে লিফলেট বিলি করেছিল। আমি বলব ওঁর শুভবুদ্ধির উদয় হোক, ওঁর যদি মানসিক অসুস্থতা থাকে তাহলে চিকিত্সা করান। এটা দীর্ঘদিনের ইস্যু। যা কিছু হচ্ছে তাতেই টিনা সাহা ভৌমিক। কারণ আমি তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। ওঁর বক্তব্য একটাই। টাকা তুলে ওঁর কেরিয়ার শেষ। এখন টিনাকে নিশানা করতে হবে। এটার ওঁর লক্ষ্য। উনি যা বলেছেন তার একটা প্রমাণ এনে দেখান। ওঁর বাড়িতে যতগুলো  চাকরি হয়েছে তার সবকিছু যদি বলি তাহলে ওঁর কাপড় খুলে যাবে। ওঁর সব অভিযোগ ভিত্তিহীন।

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *