রাধার বেশে মহাপ্রভু…
ভগবানের প্রসাদ গ্রহণ করেন মঠ মন্দিরের সমস্ত ভক্তরা। শাস্ত্র বিধি অনুযায়ী, একে বলা হয় আত্মবৎ সেবা। অর্থাৎ নিজেদের মতো করে ভগবানকেও ভোগ নিবেদন করা। প্রবল এই গরমে গুরুপাক খাবার ছেড়ে ভগবানের উদ্দেশ্যে ঠান্ডা খাবার নিবেদন করা হয় । নবদ্বীপের বিভিন্ন মঠ ও মন্দিরে ভগবানের মধ্যাহ্নকালীন ভোগের মেনুতে দেওয়া হচ্ছে সুক্তো, ভাজা, আমের টক থেকে শুরু করে ঠান্ডা পানীয় হিসেবে শরবত, ফলের রস,ঘোল, দই। এছাড়াও বিভিন্ন প্রকার রসালো ফল ভগবানের উদ্দেশ্যে নিবেদন করা হয়।
গ্রীষ্মের এই দাবদাহে শীতল ভোগও নিবেদন করা হয় কোনও কোনও মন্দিরে। দুপুরের অন্ন বা ভাত ঠান্ডা জলে ভিজিয়ে রেখে তাতে টক দই, আদা, আম, লঙ্কা দিয়ে শীতল ভোগ তৈরি করা হয়। মানুষের মতোই পোশাকেও পরিবর্তন আনা হয় নবদ্বীপ মায়াপুরের মঠ মন্দিরগুলোতে।
মোটা রংবেরঙের ঝা চকচকে জরি, চুমকি ভারী পোশাকের পরিবর্তে পরানো হয় হালকা সুতির পোশাক। যাতে মানুষের মতই গরমের সময় কোনও ভাবেই আরাধ্য দেবতারা কষ্ট না পান। গরমের রাতে মঠ মন্দিরের বিগ্রহকে শোওয়ানো হয় শীতল পাটিতে। এ বিষয়ে নবদ্বীপ মহাপ্রভুর জন্মস্থানের সেবাইত তথা সভাপতি অদ্বৈত দাস বাবাজী বলেন, ‘ভগবান কে ছাড়া আমরা কিছুই ভাবতে পারি না। তাই গরম কালে আমাদের যেমন কষ্ট হয় তেমনই ভগবানেরও কষ্ট হয়। গরম কালে আমরা যেমন খাওয়া দাওয়া পোশাক আশাক পরিবর্তন করি তেমনই ভগবানের ক্ষেত্রেও একই করে থাকি। গরমের কটা দিন বিগ্রহকে চন্দন মাখিয়ে রাখা হয়। যত রকমের হালকা খাবার তেল মশলা বেশি না দিয়ে সেসব তৈরি করে নিবেদন করা হয়।’
নবদ্বীপ মহাপ্রভু মন্দিরের সেবাইত সুদিনকুমার গোস্বামী বলেন, ‘গ্রীস্মের বৈশাখে শীতল ভোগ নিবেদন করা হয়। যার মধ্যে পাকাল ভোগ। সূর্যাস্ত কালে ডাব, মিশ্রীর শরবত দেওয়া হয়। গ্রীস্মের এই সময় প্রভুকে আতর দেওয়া হয়ে থাকে। সেই আতর দেওয়ার ফলে প্রভু শরীরে ঠান্ডা অনুভব করবেন। গরমে সুতির পোশাক হিসেবে ধুতি পরানো হয়।’