তিন জঙ্গলেই শিকারের অভুক্ত অংশ হিসেবে সম্বর হরিণ বা বাইসনের মতো বড় আকারের তৃণভোজীর দেহাবশেষ মিলেছে। আর চিতাবাঘের পক্ষে বাইসন অথবা বড় আকারের যে কোনও বন্যপ্রাণীর শিকার করা অসম্ভব। ওই যুক্তিতেই বন দপ্তরের দাবি যে, নির্দিষ্ট ওই তিন অরণ্য এবং কালিম্পং ও দার্জিলিং বনবিভাগের বিস্তীর্ণ এলাকায় একাধিক বাঘের নিয়মিত আনাগোনা রয়েছে।
বনকর্তারা স্বীকার করে নিয়েছেন যে, এত দিন ধরে সীমিত পরিকাঠামো ব্যবহার করে যে ধরনের নজরদারি চালানো হতো, বর্তমান পরিস্থিতিতে তা আর কাজে আসবে না। বাঘেদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে নজরদারির পরিকাঠামোকে ঢেলে সাজতে হবে। সেই কারণেই মনিটরিং টিমকে গুরুত্ব দিয়ে মাঠে নামানো হবে। ক্যামেরা ট্র্যাপের সঙ্গে সঙ্গে আমদানি করা হচ্ছে জিও ট্রাঙ্কুইলাইজার গান। মনিটরিং টিমের সদস্যদের জন্যে হেলমেট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ক্যামেরা ট্র্যাপগুলি আমদানি করা হবে আমেরিকা থেকে।
ভারতীয় টাকায় ওই অত্যাধুনিক ক্যামেরার একেকটির দাম প্রায় ২৩ হাজার টাকার বেশি। আমদানি করা ক্যামেরাগুলিতে ইনফ্রারেড ও ফ্ল্যাশ ক্যামেরার মতো প্রযুক্তি থাকবে। আপাতত যে ক্যামেরা ট্র্যাপ বসানো আছে, তাতে শুধুই স্টিল ছবি ওঠে। কিন্তু নতুন যে ক্যামেরাগুলি আমদানি করা হবে, সেগুলি দিনেরাতে এক সঙ্গে স্টিল মোড ও ভিডিয়ো মোডে ছবি তুলতে সক্ষম হবে। তাতে তথ্য-প্রমাণ আরও যথাযথ হবে।
এই তিন সংরক্ষিত অরণ্যের মধ্যে আকারে সবচেয়ে বড় বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প। যার আয়তন ৭৬০ বর্গকিলোমিটার। ন্যাওড়াভ্যালি আয়তনে ৮৮ বর্গকিলোমিটার হলেও অত্যন্ত দুর্গম। আর মহানন্দা অভয়ারণ্যের ব্যাপ্তি ১৫৮ বর্গ কিলোমিটার। সব মিলিয়ে ওই তিন সংরক্ষিত অরণ্যে দক্ষিণরায়দের অবস্থান বুঝে নিতে সাজ সাজ রব উঠেছে বন দপ্তরের অন্দরে। যে কারণে বন্যপ্রাণীরা লোকালয়ে বেরিয়ে এলেই দ্রুত তাদের জঙ্গলে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যে গঠন করা হয়েছে ক্যুইক রেসপন্স টিম।
উত্তরবঙ্গের বন্যপ্রাণ শাখার মুখ্য বনপাল রাজেন্দ্র জাখর বলেন, ‘যেহেতু বারবার বাঘের আনাগোনা ও প্রামাণ্য ছবি সামনে আসছে, তাই আমরা বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে বিচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নজরদারি বাড়াতে আরও অতিরিক্ত দেড় হাজার অত্যাধুনিক ক্যামেরা ট্র্যাপ বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সঙ্গে আসছে জিও ট্রাঙ্কুইলাইজার গানও।’