Birth Control Methods : মায়ের কোলে আসুক ছেলে! জন্মরোধ শিকেয় – young mothers of rural bengal are turning away from modern methods of birth control


জয় সাহা
ছেলে নেই? মেয়ে জন্মেছে? এ বার তো একটা ছেলে চাই-ই চাই! যদি এক ছেলের পর এক মেয়ে হয়, তা হলে? ফের গর্ভধারণ ওই একটাই আশায় – আরও পুত্রসন্তান চাই। পুত্রলাভের আশায় গর্ভধারণে যেন বিরাম নেই। এই আকাঙ্ক্ষা থেকে কি জন্ম নিয়ন্ত্রণের আধুনিক পদ্ধতি থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন গ্রামীণ বাংলার যুবতী মায়েরা?

E Auto In Kolkata : বায়ুদূষণ রুখতে নিউ টাউনে এবার চালানো হবে ই-অটো
এই প্রশ্নই তুলে দিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের একটি সাম্প্রতিকতম সমীক্ষা। তবে বাংলার তুলনায় এই প্রবণতা প্রতিবেশী রাজ্য বিহারে অনেক বেশি। সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, সন্তানলাভের আশায়, নিঃসন্তান দম্পতিরা জন্ম নিয়ন্ত্রণ কম করছেন। বাড়িতে পুত্র থাকলে তবু এক রকম। মেয়ের মায়েদের বেশির ভাগ সময়েই জন্ম নিয়ন্ত্রণের পথ ধরছেন না বলে সমীক্ষায় প্রকাশ।

West Bengal Tourism : ইদে সুখবর, বেঙ্গল সাফারি পার্কে এল নতুন সদস্য! দেখার জন্য ব্যাকুল পর্যটকরা
সম্প্রতি রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ভারতের জনসংখ্যা চিনকে ছাপিয়ে গিয়েছে। ২০১১-র পর দেশে জনগণনা না-হলেও রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্ট ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। ‘পপুলেশন ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়া’র আধিকারিক পুনম মুর্তেজা এর প্রেক্ষিতে বলেছিলেন, ‘মেয়েদের বাল্যবিবাহ এবং অল্প বয়সে গর্ভধারণ রোখা না গেলে জন্ম নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।’ যে কথার বাস্তবিক প্রতিচ্ছবিই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমীক্ষায়।

Heart Attack : নিরক্ষর এবং গরিবদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা বাড়ছে! মিথ ভাঙল ল্যানসেটের রিপোর্ট
সমীক্ষকদের দাবি, কন্যাসন্তানের মায়েরা পুত্রের আশায় জন্ম নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছেন না। আবার, কোনও দম্পতির বড় সন্তান ছেলে, পরের জন মেয়ে হলেও তাঁরা পুত্রের আশায় জন্ম নিয়ন্ত্রণে অনীহা দেখাচ্ছেন।

সম্প্রতি রাজ্যের একাধিক জেলায় ঘুরে ১৮ থেকে ২২ বছর বয়সি গ্রামীণ বিবাহিত মহিলাদের সঙ্গে কথা বলে সমীক্ষাটি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক অরিজিতা দত্ত। তাঁকে সাহায্য করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস ম্যানেজমেন্টের অধ্যাপক শর্মিষ্ঠা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং যাদবপুরের দুই অধ্যাপক পিয়ালী শূর ও ঐশিকা চক্রবর্তী।

Eid Ul Fitr 2023 : মহিলাদের খুশির ইদ পালনে বাধা, আফগানিস্তানে অব্যাহত তালিবানি ফতোয়া
জাতীয় মহিলা কমিশনের উদ্যোগে হওয়া দেশব্যাপী সমীক্ষার অংশ এটি। যেখানে বাংলা এবং বিহারের সেই জেলাগুলিকেই অরিজিতা বেছে নিয়েছিলেন, যেখানে অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ের হার বেশি। পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভাবে প্রান্তিক, সংখ্যালঘু ও তফসিলি জাতি-উপজাতির মানুষের বসবাস বেশি।

অরিজিতা জানান, বিহারের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা ভালো। কিন্তু দু’রাজ্যেরই মহিলাদের ৮০ শতাংশের বেশি জানিয়েছেন, অন্তত একটি পুত্রসন্তানের আশা রাখেন তাঁরা। তাই এই মহিলাদের অনেকেই জন্ম নিয়ন্ত্রণের আধুনিক পদ্ধতি যেমন কন্ডোম, কন্ট্রাসেপটিভ পিল, কপার-টি, স্টেরিলাইজেশনের পথ ধরেন না।

Numerology: নিউমেরোলজি মেনে কার কেমন কাটবে সোমবার? জানুন ভাগ্য খুলবে কোন রঙের পোশাকে
অনেকে অবশ্য তা ব্যবহারের স্বাধীনতাটুকুও পান না। কন্যাসন্তানের যুবতী মায়েদের আরও খারাপ। তুলনায় ভালো অবস্থা পুত্রসন্তানের মায়েদের। তাঁরা অন্তত জন্ম নিয়ন্ত্রণের স্বাধীনতাটুকু পাওয়ার চেষ্টা করছেন। যার সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়ছে মহিলাদের স্বাস্থ্যের উপরে। অতিরিক্ত গর্ভধারণের প্রভাব পড়ছে মায়েদের শরীরে। সমীক্ষকদের দাবি, আশাকর্মীরা জন্ম নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে প্রায় কোনও কথাই বলেন না। ফলে সচেতনতাও তৈরি হয় না।

Kolkata Municipal Corporation : ইউনিট এরিয়া নিয়ে বিস্তর নালিশে নাজেহাল পুরসভা
এ প্রসঙ্গে সাহিত্যিক তিলোত্তমা মজুমদারের পর্যবেক্ষণ, ‘এর নেপথ্যে অর্থনৈতিক কারণই সবচেয়ে বেশি দায়ী বলে মনে হয়। কারণ, কন্যাসন্তান এখন ততটা নিন্দনীয় না হলেও তাকে বিয়ে দেওয়ার চাপ আজও রয়েছে। আর এই জন্মহার কমানো না গেলে আমরা অচিরেই দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়ব।’ যদিও খানিকটা ভিন্নমত নারী অধিকার আন্দোলনের কর্মী শাশ্বতী ঘোষের। তাঁর কথায়, ‘পুত্রসন্তান থাকার তকমা যে মেয়েদের নেই, তাঁরাই এর শিকার। কেবল গ্রাম কেন, শহরেও এর প্রভাব রয়েছে।’

যদিও পশ্চিমবঙ্গের নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশীর পাঁজার বক্তব্য, ‘মেয়েদের নানা সামাজিক প্রকল্প, স্বাস্থ্যের সুবিধে, মায়েদের জন্য পুষ্টিকর খাদ্যের ব্যবস্থা করা হচ্ছে রাজ্যের তরফে। আমরা আরও বেশি করে সচেতন করতে পারি। কিন্তু মানসিকতার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। তা পরিবর্তন করতে হবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *