অয়নের সল্টলেকের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে এবং পরে তাঁকে হেফাজতে নিয়ে ইডি জানতে পারে, শুধু শিক্ষক নিয়োগেই নয়, পুরসভাতেও নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির জাল ছড়িয়েছেন ওই ব্যবসায়ী। ওই বেআইনি নিয়োগ-চক্রে পুরসভার কর্তাদের একাংশও জড়িত বলেও অভিযোগ রয়েছে। তাঁরা কারা, কী ভাবে পুরসভাগুলিতে অযোগ্যদের চাকরি হয়েছিল, প্রক্রিয়াটা কেমন ছিল- সে সব খতিয়ে দেখতেই এ বার অয়নকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চায় সিবিআই।
পুরসভার নিয়োগ-দুর্নীতি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। এই ব্যাপারে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর নির্দেশে জানিয়েছেন, প্রয়োজনে সিবিআই আলাদা ভাবে এফআইআর করতে পারবে। সিবিআই সূত্রের খবর, সংস্থার দুর্নীতি দমন শাখার অফিসাররা এই বিষয়ে ইডি-আধিকারিকেদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
অয়নের বিরুদ্ধে তাঁদের কাছে থাকা নথিগুলোও চাওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা প্রাথমিক ভাবে যা তথ্য পেয়েছেন, তাতে রাজ্য জুড়ে পুরসভাগুলোয় বেআইনি নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রায় ২০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। যদিও ইডি-আধিকারিকরা মনে করছেন, দুর্নীতির টাকার অঙ্কের পরিমাণ আরও অনেক বেশি হতে পারে।
সিবিআই সূত্রের খবর, টিটাগড়, বরাহনগর, কাঁচরাপাড়া, নিউ ব্যারাকপুর, কামারহাটি, হালিশহর, দক্ষিণ দমদম, দমদম, টাকি পুরসভার বিষয়ে নথিপত্র হাতে পেয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। ওই পুরসভাগুলির অফিসারদের একাংশের সঙ্গে অয়নের দহরম-মহরম ছিল বলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা জেনেছেন। তাঁদের বক্তব্য, ওই সব পুরসভায় অয়নের মাধ্যমে অনেকে কাজ পেয়েছেন।
রাজ্যের ৯০টি পুরসভায় অয়নের যোগ ছিল বলেও একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে। বহু পুরসভায় অয়নের সংস্থা এবিএস ইনফোজন প্রাইভেট লিমিটেড টেন্ডারে অংশ নিয়ে চাকরির পরীক্ষার বন্দোবস্ত করত। ফলে, নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে অয়নের হাতের মুঠোয় সবটা ছিল- এমনটাই গোয়েন্দাদের দাবি।
এ ভাবেই পুরসভার অফিসারদের একাংশের সঙ্গে অয়নের যোগসাজশের পরিণামে টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের চাকরি হয়ে যেত বলে অভিযোগ উঠেছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের একাংশ জানাচ্ছেন, অয়নকে হেফাজতে পাওয়া গেলে তার পর ওই পুরসভাগুলির কয়েক জন কর্তাকে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে।