বিধায়ক তাপসের উপরে দুর্নীতির পাহাড় চাপিয়েছিলেন, ৪ দিনের মাথায় পাল্টি তাঁর আপ্ত সহায়কের


বিক্রম দাস: নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহার। বিধায়ক ও তাঁর আপ্ত সহায়ক প্রবীর কায়ালের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে সিবিআই। সেই সূত্রেই এবার ইডির নজরে তাপস সাহা। অভিযোগ, পুলিস, বিসিএস, শিক্ষকতার চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে কোটি কোটি টাকা তুলেছেন তাপস। এনিয়ে তাপস সাহাকে তলবও করেছে সিবিআই। তল্লাশি চালানো হয়েছে তাঁর বাড়িতে। ফলে চাপ বেড়েছে তাপসের আপ্ত সহায়ক প্রবীর কয়ালের উপরে। প্রবীর দাবি করেছেন তিনি এবং তাপস সাহা ষড়যন্ত্রের শিকার। চাকরি বিক্রির সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই।

আরও পড়ুন-অভিষেকের নাম করে কোটি কোটি টাকা তুলেছেন জেলা নেত্রী টিনা সাহা, বিস্ফোরক তৃণমূল বিধায়ক

উল্লেখ্য, সম্প্রতি প্রবীর কয়ালের বাড়িতে গিয়েছিল সিবিআই। সেইসময় তিনি দাবি করেছিলেন, নিয়োগ দুর্নীতির সব অভিযোগ তিনি চাপিয়ে দিয়েছিলেন তাপস সাহার উপরে। তাকে দিয়ে টাকা তুলিয়েছেন তাপস সাহা। এবার তিনি ডিগবাজি খেলেন। প্রবীর কয়াল আজ দাবি করেছেন তিনি ও তাপস সাহার সঙ্গে দুর্নীতির কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা ষড়যন্ত্রের শিকার। রাজ্য পুলিসের হেফাজতে থাকাকালীন জোর করে বয়ান নিয়ে নেওয়া হয়।

গত ২১ এপ্রিল সংবাদমাধ্যমে প্রবীর কয়াল বলেন, আমার সঙ্গে তাপস সাহার কোনও সম্পর্ক ছিল না। কলকাতায় আমি একটা কাজ করতাম। সেই সময় হোটেল উনি খেতে আসতেন সেই সূত্রেই ওঁর সঙ্গে আমার পরিচয়। আমার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে উনি আমাকে ব্যবহার করেছেন। আমাকে এই প্রতারণায় ফাঁসিয়েছে। রাজ্য পুলিসের অ্যান্টি কোরাপশন ব্রাঞ্চ যখন আমাকে গ্রেফতার করেছিল তখন আমি সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছিলাম। কিন্তু আইও অনুপমবাবু আমাকে বলেছিলেন তাপস সাহাকে ধরার মতো ক্ষমতা ওঁর নেই। তাপস সাহা আমাকে ফাঁসিয়েছে। উনি বলতেন টাকাটা তুই নিয়ে নিয়ে আমাকে দিয়ে দিস। চাকরি-সহ বিভিন্ন কাজে টাকা নেওয়া হতো। আমি ওঁর আপ্ত সহায়ক ছিলাম না। আমাকে উনি ব্যবহার করেছেন।

এদিকে মঙ্লবার সেই প্রবীর কয়াল বলেন, আপ্ত সহায়ক হওয়ার বিভিন্ন শর্ত থাকে। আমি তাপস সাহার পিএ হওয়ার যোগ্য নই। আমি সাধারণ এইট পাস ছেলে। যে অমৃত ব্যাপারি জমি জায়গা বিক্রির ব্যাপারে অভিযোগ তুলেছেন তিনি জানতেন তিনি তাপস সাহাকে ফাঁসাতে পারবেন না। উনি আসলে জমি জায়গা বিক্রির দালাল। তাই যেহেতু প্রবীর কয়ালের সঙ্গে তাপসের একটা সম্পর্ক রয়েছে তাই আমাকে পিএ বলে পরিচয় দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্য কাউকে আড়াল করতেই আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, কয়েক দিন আগেই তৃণমূলের এক জেলা নেত্রীর বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা তোলার অভিযোগ তুলেছিলেন তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহা। তাঁর অভিযোগ ছিল, জেলা নেত্রী টিনা সাহা ভৌমিক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে টাকা তুলছেন। এর আগেও একাধিক বার টিনা সাহা ভৌমিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন তাপস সাহা। তাঁর দাবি তাঁকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে। টিনা জন্ম সার্টিফিকেট নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাপসবাবু। গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় থেকেই তাপস সাহা ও টিনা সাহা ভৌমিকের মধ্যে রাজনৈতিক মতবিরোধ সামনে চলে আসে। এতদিন তার কাদা ছোড়াছুঁড়ির পর্যায়ে চলে গিয়েছে। 

মারাত্মক ওই অভিযোগ নিয়ে নদিয়া জেলা পরিষদ সদস্য টিনা সাহা ভৌমিক বলেন, এতো উল্টা চোর কোতওয়ালকে ডাঁটে। যার নামে সিবিআই হল, যাঁকে প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে আদালতে তোলা হল তিনি বলছেন অন্যজনের নামে। অন্য কাউকে এতবড় কথা কাউকে বলতে শুনেছেন? উনি একমাত্র ব্যক্তি যিনি আমার নামে ক্রমাগত কুত্সা করছেন। একবার মার্ডার কেসে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল, একবার আমার নামে লিফলেট বিলি করেছিল।

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *