পুলিশের দাবি, তার সঙ্গেই রয়েছে আতিকের স্ত্রী শায়িস্তা আহমেদ। গুড্ডুর সঙ্গী আসাদ কালিয়াকে দু’দিন আগেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কিন্তু গুড্ডু ও শায়িস্তা অধরাই। সপ্তাহখানেক আগে শোনা গিয়েছিল, গুড্ডুকে নাকি নাসিক থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে জানা যায়, সে অন্য গুড্ডু। এখন শোনা যাচ্ছে- সে নাকি দাড়ি বাড়িয়ে মুশির্দাবাদের আশপাশে ঘাঁটি গেড়েছে!
২০০৫-এ বিএসপি বিধায়ক রাজু পালকে খুনের মামলায় গোড়া থেকেই অভিযুক্ত আতিক গ্যাং। রাজু-খুনের সাক্ষী উমেশকে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি একই কায়দায় প্রকাশ্য রাস্তায় আতিক গ্যাংই খুন করে বলে অভিযোগ। সেই ঘটনার পর থেকেই ফেরার আতিক গ্যাংয়ের একটা বড় অংশ। প্রথমে আতিকের ছেলে ও তার এক সঙ্গী পুলিশি এনকাউন্টারে মারা যায়।
তার দু’দিনের মাথায় জেলবন্দি আতিক ও তাঁর ভাই আশরফকে পুলিশি ঘেরাটোপে অসংখ্য টিভি ক্যামেরার সামনে খুন করে তিন তিন দুষ্কৃতী। আপাতত গুড্ডুকে ধরাই তাদের প্রধান লক্ষ্য বলে দাবি উত্তরপ্রদেশ পুলিশের। কিন্তু কোথায় সে? পুলিশের দাবি, এর মধ্যে ওডিশা, ছত্তিসগড়, কর্নাটক, মহারাষ্ট্রে গুড্ডুর খোঁজ মিললেও ধরা যায়নি। সম্প্রতি ওডিশার বরগঢ় শহর থেকে রাজা খান নামে গুড্ডুর এক সহযোগীকে আটক করে পুলিশ। জেরায় সে জানায়, পুলিশের চোখে ধুলো দিতে বেশ বদলেছে গুড্ডু। দাড়িও রাখতে শুরু করেছে। পুলিশকে ধোঁকা দিতেই সে ঘনঘন লোকেশন পাল্টাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
‘মেন বাত ইয়ে হ্যায় কি গুড্ডু মুসলিম…’ (আসল কথাটা হলো গুড্ডু মুসলিম…) কথাটা শেষ করার আগেই ভিড়ের মধ্যে থেকে আচমকা ধেয়ে আসা গুলি ফুঁড়ে দিয়েছিল আশরফ আহমেদের মাথা। একই হাল হয় আতিকেরও। তখন থেকেই সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে গুড্ডু মুসলিম। আতিক গ্যাংয়ের সে-ই সবচেয়ে বিপজ্জনক বলে উমেশের পরিবারকে সতর্কও করে দিয়েছিল পুলিশ।
আতিক-খুনের দিনদশেক পরে এখনও সেই গুড্ডু মুসলিমই ঘুম কাড়ছে পুলিশের। যার মাথার দাম ৫ লক্ষ টাকা! পুলিশের দাবি, আতিকের ডান হাত গুড্ডু মুসলিমের সঙ্গে অপরাধ জগতের পরিচিতি বহু পুরোনো। প্রয়াগরাজে জন্ম গুড্ডুর, চার ভাইয়ের মধ্যে সবচেয়ে ছোট। স্থানীয়দের দাবি, ছোটবেলা থেকেই গুড্ডু এমন গুন্ডা-নিষ্ঠুর প্রকৃতির ছিল, সে রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলে কেউ তার দিকে চোখ তুলে তাকানোর সাহস পেত না।
সকলে ভয় পেত, হয়তো বলিউডি সিনেমার গ্যাংস্টারদের মতো যে কোনও সময়ে কাউকে খুন করে ফেলতে পারে গুড্ডু! আতিকের দলে যোগ দেওয়ার আগে ডন-রাজনীতিক মুখতার আনসারির হয়ে কাজ করত গুড্ডু। তবে পুলিশের দাবি, লখনউয়ের দুই গ্যাংস্টার অভয় সিংহ এবং ধনঞ্জয় সিংহের ছত্রচ্ছায়াতেই আড়েবহরে বাড়ে গুড্ডু। ১৯৯৭ সালে একটি মিশনারি স্কুলের শিক্ষককে খুন করে প্রথম বার খবরের শিরোনামে আসে বোমবাজ গুড্ডু।