হরিদেবপুর এলাকার বরোদা সরণির ঋষভকে গুরুতর জখম অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করে নিয়ে যায় রুবি মোড়ের কাছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে। পুলিশকে ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, বাসের চাকায় ঋষভের বাঁ পায়ের চারটি আঙুল পিষে গিয়েছে। হাসপাতালে ঋষভের পায়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে অস্ত্রোপচার হয়। তার পায়ে প্লেট বসেছে।
অস্ত্রোপচারের পর হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, ওই নাবালকের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। ঋষভ যে বাসে ছিল, সেটি একটি বেসরকারি বাস- থ্রি-সি বাই ওয়ান রুটের। দুর্ঘটনার পর সেটি ওখানে না-থেমে বেরিয়ে যায়। পরে পুলিশ ওই এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে বাসটিকে শনাক্ত করে আটক করে। ঋষভের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ বাসের চালক ও কন্ডাক্টরকে গ্রেপ্তার করেছে।
সকাল সকাল, স্কুলশুরু হওয়ার ঠিক আগে ওই ঘটনায় ডিপিএস রুবি পার্কের বহু পড়ুয়ার অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। উদ্বিগ্ন হন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশও। যেখানে ঘটনাটি ঘটে, তার অদূরে, রাজডাঙা চক্রবর্তী পাড়া রোডে ডিপিএস রুবি পার্কে সিনিয়র স্কুল, যেখানে ঋষভের ক্লাস হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন দুপুরে কলকাতা পুলিশের কর্তারা ওই জখম পড়ুয়ার সঙ্গে কথা বলেন। পুলিশের বক্তব্য, ঋষভ জানিয়েছে, সে বাসের দরজার মুখে সিঁড়িতে দাড়িয়েছিল। তার বক্তব্য, অনেক সময়ে স্কুলের স্টপ চলে এলেও বাস সেখানে না-থেমে অনেকটা দূরে নিয়ে যাত্রীদের নামায়। এ দিনও তেমনটা হবে ভেবে সে চলন্ত বাস থেকে নামতে গিয়েছিল।
তখনই ওই ঘটনা। ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশের কর্মী ও অফিসাররা ওই জখম স্কুলপড়ুয়াকে উদ্ধার করতে ছুটে যান। ঋষভের বাড়ির লোকজনকে পুলিশই ফোন করে দুর্ঘটনার খবর দেয়। ঋষভের মা-বাবা জানান, তাদের ছেলে রোজ সাধারণত বাসে করেই স্কুলে যাতায়াত করত।
লালবাজারের এক কর্তা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পরেও বাসটি কেন থামল না, ধৃত বাসচালককে জেরা করে সেটা জানার চেষ্টা হচ্ছে। স্থানীয় একটি সূত্রের খবর, বাসটির পিছনেই একই রুটের অন্য একটি বাস চলে আসায় চালক তাড়াহুড়ো করছিলেন। লালবাজারের এক কর্তার বক্তব্য, ‘বহু পড়ুয়া স্কুলবাসে যাতায়াত করে না, তারা একাই যাতায়াত করে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বাসে। পড়ুয়াদের বাসে ওঠা ও নামার সময়ে চালক ও কন্ডাক্টররা যাতে বিশেষ ভাবে সতর্ক থাকেন, তা নিয়ে ধারাবাহিক প্রচার চালানোর ব্যাপারে আলোচনা চলছে।’