অভিযোগ ছিল, দিলীপ রায়ের সঙ্গে অপর এক মহিলার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় স্ত্রী’কে মারধর ও নির্যাতন করত। সেই ঘটনার জেরেই ওই বছরের ১০ আগস্ট গভীর রাতে শোয়ার ঘরে স্ত্রী’কে শ্বাসরোধ করে খুন করে দিলীপ। মৃত গৃহবধুর নাম সুপ্রিয়া রায়।
তাঁর বাবার বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলার ফরাক্কা থানা এলাকায়। ওই দিন প্রতিবেশীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে ছুটে আসেন সুপ্রিয়ার পরিবারের লোকজন। বাড়িতে এসে মেয়ের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন তাঁরা।
তারপরেই মৃত গৃহবধুর বাবা অভিনয় মণ্ডল মানিকচক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে স্বামী সহ আরও একজনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তারপর মালদা জেলা আদালতে শুরু হয় এই মামলা।
প্রায় ৭ বছর ধরে চলে এই মামলার শুনানি। অবশেষে একাধিক সাক্ষী ও প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযুক্ত দিলীপ রায়কে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ, ৩০২, ৩০৪ বি ও ৩৪ ধারায় মামলা হয়।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ তে দোষী সাব্যস্ত করে তিন বছরের জেল ২ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দু’মাস জেলের সাজা ঘোষণা করে আদালত। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাস জেল হেফাজতের সাজা ঘোষণা করে আদালত।
এই বিষয়ে সরকারি পক্ষের আইনজীবী প্রশান্ত কুণ্ডু বলেন, “এই মামলায় অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। মোট ১৬ জনের সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন শুনানি চলাকালীন। তার মধ্যে ছয় বছরের সন্তানের বয়ানের উপর ভিত্তি করেই অভিযুক্তকে দোষী প্রমাণিত করেছে আদালত। অবশেষে সাজা ঘোষণা হল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।”
মৃতা সুপ্রিয়ার মা এদিন বলেন, “এবার আমরা শান্তি পেলাম। আমার মেয়ে বিচার পেল। অনেকদিন সময় লাগল এই রায় বেরোতে। যদি আরও আগে এই রায় ঘোষণা হত তো ভালো হত।