ইডি-র দাবি, নিয়োগ দুর্নীতিতে অযোগ্যদের থেকে যে বিপুল পরিমাণ টাকা তুলেছিলেন অয়ন, তা পাচারের জন্যই হুগলির চুঁচুড়ায় আবাসন প্রকল্প গড়ে তোলেন তিনি। তারপর কোটি কোটি টাকা ঘুরপথে নিজের আয়ত্তে রাখতে পরিবারের সদস্য ছাড়াও ব্যবহার করেন ঘনিষ্ঠ শ্বেতা চক্রবর্তীর নাম। তাঁদের নামে কেনা হয় একাধিক ফ্ল্যাট।
মঙ্গলবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে ইডির বিশেষ আদালতে অয়নের এমনই ২০টি ফ্ল্যাটের বিষয়ে তথ্য পেশ করে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। এমনকী, দিল্লিতেও অয়নের একটি ফ্ল্যাটের হদিশ মিলেছে। অয়নের পাঁচটি বিলাসবহুল গাড়িরও খোঁজ মিলেছে। যার মধ্যে একটি অয়ন ঘনিষ্ঠ শ্বেতা এবং অন্যটি স্ত্রী কাকলি শীলের নামে। ফ্ল্যাট-গাড়ির পাশাপাশি তাঁর নামে এবং বেনামে রয়েছে বহু জমিও।
কী ভাবে এত সম্পত্তির মালিক হলেন ওই ব্যবসায়ী, তা খতিয়ে দেখতে হাইকোর্টের নির্দেশে পুরসভা দুর্নীতির ঘটনায় পৃথক এফআইআর করেছে সিবিআই। আর সেই এফআইআরের ভিত্তিতে ইডি-ও আসরে নেমেছে। আজ, বুধবার ইসিআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করতে পারে ইডি। মঙ্গলবার দুপুর তিনটে নাগাদ অয়নকে জেল হেফাজত থেকে আদালতে পেশ করা হয়।
পক্ষে কৌঁসুলি ছিলেন সঞ্জীব দাঁ এবং শৌভিক মিত্র। তাঁরা বিচারককে বলেন, ‘ইডি ইতিমধ্যেই নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে, তথ্যপ্রমাণ লোপাট করতে পারবেন না মক্কেল। সুতরাং তাঁকে জামিন দেওয়া হোক।’ জবাবে ইডির কৌঁসুলি ফিরোজ এডুলজি বলেন, ‘বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির পাশাপাশি ২০টি ফ্ল্যাটের সন্ধান মিলেছে। ৫০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সন্দেহজনক লেনদেনও হয়েছে।’
দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে ৮ মে পর্যন্ত অয়নকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। এ দিন শিক্ষক নিয়োগ মামলায় সওয়াল-জবাব হলেও বিচারককে নতুন এফআইআরের বিষয়ে জানায় সিবিআই। কেন্দ্রীয় সংস্থা সূত্রে খবর, গত ২২ এপ্রিল পুরসভা নিয়োগ দুর্নীতিতে এফআইআর করা হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির দুর্নীতি দমন আইনের ৫টি ধারায় মামলাও হয়েছে।
ওই অভিযোগপত্রে অয়ন, তাঁর কোম্পানি এবিএস ইনফোজেন প্রাইভেট লিমিটেড, অজ্ঞাত পরিচয় সরকারি অফিসারদের নাম রয়েছে। ইডিও পুরসভা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। তারা জানতে পেরেছে, প্রায় ৯০টি পুরসভায় যোগাযোগ ছিল অয়নের। মোট ৬ হাজার কর্মচারী নিয়োগ হয়েছিল এবিএস ইনফোজেন প্রাইভেট লিমিটেডের মাধ্যমে। ধৃত প্রোমোটরকে কোন কোন সরকারি অফিসাররা সাহায্য করতেন, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।