Aindrila Sharma, Sikha Sharma, Didi no.1, Rachana Banerjee, জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: নভেম্বর ২০২২ থেকে এপ্রিল ২০২৩, মাঝে কেটে গেছে ৫ মাস, এখনও অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মার অকালে চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছে না তাঁর অনুরাগীরা আর পরিবারের কাছে যে এই দুঃখ আজীবনের তা বলাই বাহুল্য। সদা হাস্য মুখের পরিবারের ছোট্ট মেয়েটাকে প্রতিনিয়ত চোখে হারান তাঁর পরিবার। ঐন্দ্রিলা চলে যাওয়ার পর তাঁর মা মিডিয়ায় মাঝেই মাঝেই তুলে ধরেছেন কীভাবে কষ্টে দিন কাটছে তাঁর। এবার দিদি নম্বর ওয়ানের মঞ্চে দেখা গেল ঐন্দ্রিলার মা শিখা শর্মা ও দিদি ডাঃ ঐশ্বর্য শর্মাকে।
আরও পড়ুন- Jiah Khan Suicide: ১০ বছর পর জিয়া খান আত্মহত্যা মামলার চূড়ান্ত রায়, উদ্বিগ্ন সুরজ পাঞ্চোলির পরিবার…
ঐন্দ্রিলার দিদি ঐশ্বর্য বলেন, ‘আমি ওর থেকে বয়সে বড় হলেও ও আমার দিদি ছিল’। ঐন্দ্রিলা যখন কোমায় লড়াই করছিলেন, সেই সময়ের কথা বলার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন অভিনেত্রীর মা। চোখে জল নিয়ে শিখা শর্মা বলেন যে ‘আমি ঈশ্বরের কাছে চেয়েছিলাম ঈশ্বর আমাকে নিয়ে ওকে বাঁচাও’। দিদি নম্বর ওয়ানে আসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ওর সঙ্গেই দিদি নম্বর ওয়ানের মঞ্চে আসার কথা ছিল। আজ ও থাকলে খুবই খুশি হত।’ তাঁকে সান্ত্বনা দিতে ঐন্দ্রিলার মাকে জড়িয়ে ধরে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হওয়ার পর থেকেই আবেগে ভাসছেন অনুরাগীরা। কমেন্ট বক্স জুড়ে শুধুই কান্নার ইমোজি। এক নেটিজেন লেখেন, ‘চেয়েছিলাম দিদি ফেরত আসুক’। অন্য এক ব্যক্তি লেখেন, ‘খুব খারাপ লাগছে’। আরেক ব্যক্তি লেখেন, ‘সত্যিই এপিসোডটা দেখে চোখে জল এসে গেল’। অনেকেই লেখেন, খুবই খারাপ লাগছে।
দ্বিতীয়বার ক্যানসার মুক্ত হয়ে দিদি নম্বর ওয়ান শোয়ে অংশগ্রহণের মাধ্যমেই প্রথমবার শ্যুটিং সেটে পা রেখেছিলেন ঐন্দ্রিলা। ঠিক এক বছর আগে মার্চ মাসেই দিদি নম্বর ওয়ানের মঞ্চে এসেছিলেন অভিনেত্রী। সেই সময় জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালকে তিনি জানিয়েছিলেন যে কতটা এনজয় করেছেন তিনি। তাঁর মুখে শোনা যায়, রচনা ব্যানার্জি সহ গোটা টিমের আতিথেয়তার কথা। তবে এর মাঝেই ঘটে গেছে দুর্ঘটনা। এবার ঐন্দ্রিলাকে ছাড়াই দিদি নম্বর ওয়ানের মঞ্চে আসেন অভিনেত্রী মা শিখা শর্মা, সঙ্গে তাঁর জেষ্ঠ্য কন্যা।
প্রসঙ্গত, ব্রেন স্ট্রোকের পর টানা ২০ দিন ধরে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন, তবে সব চেষ্টা ব্যর্থ করে ২১ নভেম্বর সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। পর পর ২ বার ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধ করে সেই সংক্রমণ সারিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা। আবার কাজে ফেরা। লড়াইয়ের অন্যনাম ঐন্দ্রিলা। গতবছর দীপাবলির সন্ধ্যাতেও সেজেগুজে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোকময় ছবি পোস্ট করেছিলেন ঐন্দ্রিলা। কিন্তু তার ১ সপ্তাহের মাথাতেই ১ নভেম্বর রাতে ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন তিনি। তাঁর শরীরের একদিক অসাড় হয়ে যায়। ঘন ঘন বমি করতে থাকেন। অচেতন হয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে ছোটেন তাঁর পরিবার ও প্রেমিক সব্যসাচী চৌধুরী। সেদিন রাতেই অস্ত্রোপচার হয় ঐন্দ্রিলার। তখন থেকেই ভেন্টিলেশনে ছিলেন তিনি। টলিউডের বিভিন্ন সেলিব্রিটি সহ আপামর সাধারণ মানুষ প্রিয় অভিনেত্রীর দ্রুত সুস্থতা কামনায় ‘মিরাকল’ প্রার্থনা করেন, কিন্তু শেষরক্ষা হল না।
আরও পড়ুন- Srabanti: নাম জড়িয়েছে শিশু অপহরণ ঘটনায়, লন্ডনে বিপাকে শ্রাবন্তী!
একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় ২০১৫-র ৫ ফেব্রুয়ারি জন্মদিনের দিনই তাঁর শরীরে বেড়ে ওঠা মারণরোগের কথা প্রথম জানতে পারেন ঐন্দ্রিলা। তাঁর অস্থি মজ্জায় মারণ রোগ বাসা বেঁধেছিল। তারপরই লড়াই শুরু হয় ঐন্দ্রিলার। তখন তিনি বহরমপুরেই থাকতেন। মেয়েকে নিয়ে দিল্লিতে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান বাবা-মা। চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন ঐন্দ্রিলার হাতে বেশি সময় নেই। এরপর একের পর এক কেমো, ইঞ্জেকশন শুরু হয়। শরীর যেন ক্রমশ কুঁকড়ে যাচ্ছিল। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর তবে ২০১৬ সালে সুস্থ হয়ে ওঠেন ঐন্দ্রিলা শর্মা।
আরও পড়ুন- Janhvi Kapoor: ‘এ তো পুরো উর্ফি!’ থাই-হাই স্লিট আউটফিটে তুমুল ট্রোলড জাহ্নবী…
২০১৬ থেকে ২০২১, টানা পাঁচ বছর বেশ ভালোই কাটছিল ঐন্দ্রিলা শর্মার। ততদিনে ঐন্দ্রিলার অভিনয় জীবন শুরু গিয়েছে। কিন্তু ২০২১-এর ফেব্রুয়ারিতে হঠাৎই ছন্দপতন। আচমকা ডান কাঁধে যন্ত্রণা শুরু হয় ঐন্দ্রিলার। অভিনেত্রী ভেবেছিলেন শোয়ার দোষে হয়তো ব্যথা। তারপর জানা যায়, ডান ফুসফুসে ১৯ সেন্টিমিটারের একটি টিউমার রয়েছে। আবারও শুরু হয় কেমো, সেই যন্ত্রণা। ২০২১-এর প্রায় গোটা বছরটাই ক্যানসারের সঙ্গে কঠিন যুদ্ধ চালিয়ে ফের জয়ী হন ঐন্দ্রিলা। কাজেও ফেরেন ধীরে ধীরে। কিন্তু ২০২২-এর ১ নভেম্বর রাতে ফের ছন্দপতন। ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন অভিনেত্রী। এর ২০ দিন পর চোখের জলে বিদায় নেন ঐন্দ্রিলা শর্মা।