এরপরে গ্রামের সাত মোড়লের নেতৃত্বে বসে সালিশি সভা। আর এই সালিশি সভা থেকেই গ্রামবাসীদের নিদান দেওয়া হয় তিনটি পরিবারের ১২ জন সদস্যকে গ্রাম ছাড়া করার। এমনকি গ্রাম না ছাড়লে প্রাণে মারারও হুমকি দেওয়া হয়, অভিযোগ এমনই।
আর তারপরেই ২০২০ সালের ২১ জুলাই ভয়ে গ্রাম ছাড়ে এই তিন পরিবার। তারপর কেটে গিয়েছে দু’বছর ন’ মাস । ফের গ্রামে ফেরার দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন তারা। ডেপুটেশন জমা দেন মহকুমা শাসকের কাছেও। আর তারপরেই এই পরিবারগুলিকে গ্রামে ফেরানোর উদ্যোগ নিল জেলা প্রশাসন।
তিনটি পরিবারকে ঘরে ফেরাতে বোলপুরের BDO শেখর সাঁই সহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য প্রতিনিধিরা পৌঁছন মনিকুণ্ডডাঙা গ্রামে। সেখানে গ্রামবাসীদের সঙ্গে বৈঠক করেন তারা। বৈঠকে উপস্থিত ছিল আদিবাসী সংগঠনও।
এই বিষয়ে বোলপুরের মহকুমা শাসক অয়ন নাথ বলেন, “এটা আপাতদৃষ্টিতে কুসংস্কার হলেও এর পিছনে অন্য কোনও কারণ থাকতে পারে। আমরা গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে যেটুকু জানতে পেরেছি, এখন গ্রাম ছাড়া এই পরিবারগুলি একটা সময় গ্রামেরই অন্য দুই পরিবারকে গ্রাম থেকে বিতাড়িত করেছিল। এছাড়াও তিন বছর আগে যখন এনারা চলে যান, তখন গ্রামের মানুষজন আলোচনায় বসে তাদেরকে ফেরাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাদের কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি, এতদিন ধরে তারা কোথায় ছিলেন তাও এখনও পর্যন্ত কিন্তু জানা যায়নি। এতদিন পরে তারা আবার গ্রামে ফিরতে চাইছেন।”
মূলত এই তিনটি পরিবারের বড় ছেলে আদতে মার্বেল মিস্ত্রী। তার রোজগারেই সংসার চলত এই তিন পরিবারের। কিন্তু তার পা ভেঙে যাওয়ার কারণেই রোজগারে সমস্যা হচ্ছে, আর তাই তারা আবার ফিরে আসতে চাইছেন গ্রামে, এমনটাই জানা গিয়েছে।
মহকুমা শাসক আরও বলেন, “যাই হোক আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি। গ্রামবাসীদের সঙ্গে আমরা কথাও বলেছি। আশা করছি এই তিনটি পরিবারকে খুব তাড়াতাড়ি আমরা গ্রামে ফিরিয়ে দিতে পারব। এখন জামবুনির কমিউনিটি হলে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। খাবারও প্রশাসনের তরফ থেকেই দেওয়া হচ্ছে।”