গত বছর অক্টোবর মাসে পটাশপুর থানার মংলামাড়ো বাজারে এক স্বর্ণ ব্যাবসায়ী দোকান বন্ধ করে ব্যাগে দোকানের গয়না সহ টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সেই সময়ে দুই দুষ্কৃতী বাইকে এসে ব্যবসায়ীর ব্যাগ ছিনতাই করে চম্পট দেয়। তার কিছুদিন আগে ১০ অক্টোবর সেই মংলামাড়ো বাজারে একটি ব্যাঙ্ক থেকে বন্ধকি সোনার গয়না ও টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন।
অভিযোগ, সেই সময়ে মহিলার টাকা ও গয়নার ব্যাগ ছিনতাই হয়। ঘটনায় অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। দুটি ঘটনায় পুলিশ এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে দুই দুষ্কৃতীকে চিহ্নিত করে। তদন্তের মাঝেই ভগবানপুরে এক ব্যক্তির বাইকের ডিগি ভেঙে ষাট হাজার টাকা ছিনতাই হয়। ঘটনায় বাইকের নম্বর ধরে পুলিশ অভিযুক্তের সন্ধান চালায়। তদন্তের মাঝে দুষ্কৃতীরা অন্ধ্রপ্রদেশ, ওডিশা, ঝাড়খণ্ডে সহ একাধিক রাজ্যে গা ঢাকা দেয়।
সূত্রের খবর, এই দলের কয়েকজন পাণ্ডা পশ্চিম মেদিনীপুরের বালিচক এলাকায় ঘরভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে। গত ১৫ এপ্রিল ফের পটাশপুরের চুরির নেশায় বাইকে আসে দুই দুষ্কৃতী সীতারাম দাস ও কুমার দাস। ধৃতদের বাড়ি ওডিশার জাজপুরে। মংলামাড়ো থেকে বাইকে বিভীষণপুরের দিকে তারা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল।
বাজার করতে এসে অভিযুক্তদের দেখতে পেয়ে সাদা পোশাকে পটাশপুর থানার এক ভিলেজ পুলিশ কর্মী ধাওয়া করে। বিভীষণপুরে একটি সোনার দোকানে চুরির জন্য এক দুষ্কৃতী ঢোকেন। সেই সুযোগ স্থানীয় লোকেদের সাহায্যে এক দুষ্কৃতীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। অপর এক দুষ্কৃতী পালিয়ে গেলেও পুলিশ ধাওয়া করে বাইক সহ তাকে গ্রেফতার করে। আদালতে তোলা হলে তাদের টিআই প্যারেড করা হয়।
ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ ওডিশা ডাকবাংলো এলাকায় একটি দোকানের সন্ধান পায়। চুরির হওয়া সোনা সেই দোকানে গলিয়ে নতুন গয়না তৈরি করে বিক্রি করা হতো। সেই দোকান থেকে পুলিশ চুরি যাওয়া গয়না উদ্ধার করে। উদ্ধার হয়েছে তালা ভাঙার দুটি সরঞ্জাম। সেই সঙ্গে অভিযুক্ত দোকানী কেশব চন্দ্র সাউকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
ধৃত দোকানীকে বুধবার কাঁথি আদালতে তোলা হলে বিচারক তার ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। পটাশপুর থানায় সাংবাদিক বৈঠক করে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক মহম্মদ বৈদুজামান উদ্ধার হওয়া সোনা ও টাকা প্রকাশ্যে আনেন। উপস্থিত ছিলেন পটাশপুর থানার ওসি রাজু কুণ্ডু সহ অনান্য তদন্তকারী অফিসাররা।