শুক্রবার বিকেলে রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় অবস্থিত পুলিশ সুপারের দফতরে এসে অভিযোগ দায়ের করেন মৃতের দাদা মৃণাল কান্তি বর্মণ। তাঁর দাবি, কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাই পুলিশ সুপারের দফতরে অভিযোগ জানিয়েছেন। যদিও পুলিশের ওপর তাদের কোনও রকম ভরসা নেই। তাঁরা CBI তদন্ত চান, তাই প্রাথমিকভাবে এই অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতের পরিবার।
অপরদিকে, পুলিশের গুলিতে বুধবার রাতে মৃত্যুঞ্জয় বর্মণের মৃত্যুর ঘটনার ৪৮ ঘন্টা বাদেও আতঙ্কের ছবি রয়েছে কালিয়াগঞ্জের চাঁদগাঁও গ্রামে। রাধিকাপুর পঞ্চায়েতের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার পাশের এই গ্রামে শুক্রবার দুপুরে পৌঁছে দেখা গেল শ্মশানের নীরবতা বিরাজ করছে। আতঙ্কের এই পরিবেশের মধ্যেই নিহত যুবকের মরদেহ সমাধিস্থ করার কাজ বৃহস্পতিবার শেষ রাতে সম্পন্ন হয়েছে।
বাড়ি থেকে প্রায় একশো মিটার দুরে নিজেদের জমিতেই মরদেহ সমাধিস্থ করা হয়েছে। কুকুর-শেয়ালে যেন মরদেহের ক্ষতি করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে বাঁশের বেড়া বেধে দেওয়া হয়েছে সমাধিস্থলের চারপাশে, জানিয়েছে পরিবার। মৃণাল কান্তি বর্মন জানান, “আমাদের রাজ্য পুলিশের ওপর কোনও ভরসা নেই। কারণ পুলিশের গুলিতেই আমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। আমাদের তাই পুলিশের ওপর কোনও আস্থা নেই। আমরা আমার ভাইয়ের মৃত্যুর তদন্তের জন্য CBI-কে চাই। তাহলেই আমার ভাই বিচার পাবে।”
এদিকে, মৃতের আত্মীয় তথা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বিষ্ণু বর্মণ জানিয়েছেন, “পুলিশের অত্যাচারের প্রতিবাদ করে ভাইকে গুলি খেয়ে মরতে হল। আর পুলিশ যে বলছে আমি থানাতে হামলার ঘটনার যুক্ত ছিলাম, তা সম্পূর্ণ মিথ্যে। আমি আত্মীয়ের বিয়ে নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। কালিয়াগঞ্জ থানায় গোলমালে ছিলাম না। পুলিশ কাজটা ঠিক করল না।”
এদিকে, কালিয়াগঞ্জ ব্লক জুড়ে গোটা দিন থমথমে পরিস্থিতি ছিল। দিনভর কালিয়াগঞ্জ শহর ও ব্লকের বেশিরভাগ দোকানপাটই ছিল বন্ধ। গোলমাল এড়াতে প্রশাসন ও পুলিশের তরফে কালিয়াগঞ্জ ব্লক জুড়ে আজ শুক্রবার পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে।