হাইকোর্ট জানিয়েছিল, রাজ্য সরকার ওই বকেয়া সম্পত্তিকর বহরমপুর পুরসভাকে মিটিয়ে দিলে সেই টাকা দিয়ে অবসরপ্রাপ্ত পুরকর্মীদের বকেয়া গ্র্যাচুইটি মেটানো যেতে পারে। রাজ্য সেই পথেই হাঁটছে বলে এজি জানিয়েছেন। তবে সেই সঙ্গে এজি জানান, পুরসভার কোন সম্পত্তির ক্ষেত্রে কত কর বকেয়া রয়েছে, সেই হিসেব সঠিক কি না, কিংবা কোনও সম্পত্তিতে কর ছাড়ের সুযোগ রয়েছে কি না, সেগুলি বিবেচনা করা দরকার। বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ মুর্শিদাবাদের জেলাশাসককে এ ক্ষেত্রে যাবতীয় নথি খতিয়ে দেখে বকেয়া বিলের হিসেব দাখিল করার দায়িত্ব দিয়েছে।
বহরমপুর পুরসভা কর্তৃপক্ষের দাবি, হাইকোর্টের সমাধানসূত্র মেনে রাজ্য সরকার বকেয়া প্রায় ১৮ কোটি টাকা সম্পত্তিকর মেটালে তা থেকে ১১ কোটি টাকা দিয়ে অবসরপ্রাপ্ত পুরকর্মীদের গ্র্যাচুইটি বাবদ মেটাতে সমস্যা হবে না।
বহরমপুর পুরসভা তাদের এক অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর বকেয়া না-মেটানোয় হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চ আগামী ১৫ মে পুরসভার চেয়ারম্যান নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় ও পেনশন-প্রভিডেন্ট ফান্ডের অধিকর্তাকে ব্যক্তিগত ভাবে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছে। বহরমপুর পুর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, বেঁধে দেওয়া সময় পেরিয়ে গেলেও অবসরপ্রাপ্তরা কেন তাঁদের প্রাপ্য পাচ্ছেন না, তার জবাব আদালতে তাঁদেরই দিতে হবে।
তবে বহরমপুর পুরসভার ক্ষেত্রে হাইকোর্টের সমাধানসূত্র রাজ্যের মেনে নেওয়ার কথা শুক্রবার বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে এজি জানানোয় অন্য পুরসভাগুলির ক্ষেত্রেও এ বার জট কাটবে বলে আইনজীবীদের একাংশের আশা। ডিভিশন বেঞ্চে বহরমপুর পুরসভার আইনজীবী অরিন্দম দাস ও রুমেলি সরকার বলেন, ‘আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে পুরসভা যাবতীয় করের নথি জেলাশাসকের কাছে পাঠিয়ে দেবে।’
আদালত তাতে আশ্বস্ত হয়ে জানিয়ে দেয়, ১৫ জুন মামলাটি ফের উঠবে। আইনজীবীরা মনে করছেন, একদিকে রাজ্য সরকারকে সম্পত্তিকর বাবদ বকেয়া টাকা পুরসভাকে মেটানো এবং অন্য দিকে পুরসভাকে তার অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের বকেয়া মেটানোর সময়সীমা আদালত নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। এক সরকারি কৌঁসুলির তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের কমবেশি ৯৫টি পুরসভায় অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের গ্র্যাচুইটি বাবদ প্রাপ্য বকেয়া রয়েছে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই মামলা হয়েছে হাইকোর্টে।