কলকাতা ও ভেলোরে গিয়ে ছেলের চিকিৎসাও করিয়েছিলেন হতদরিদ্র বাবা। পায়ের অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসক। কিন্তু ফুটপাথে বসে তেলেভাজা বিক্রি করা বাবা গৌরাঙ্গ দাসের পক্ষে ছেলের চিকিৎসার জন্য কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করা সম্ভব হয়নি। তাই বিছানায় শুয়েই কাটছে অশোকনগরের শান্তনুর কৈশোর।
অশোকনগর পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের তবলামহলে বাড়ি গৌরাঙ্গ দাসের। স্ত্রী শুক্লা গৃহবধূ। তাঁদের দুই ছেলেমেয়ে। বড় শান্তনু শারীরিক সমস্যা নিয়েই জন্মেছিল। একদিন বয়স থেকেই শুরু হয় খিঁচুনি। এক বছর বয়সে ফুলবাগান শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েছিলেন ছেলের। তাতে কিছু দিন ভালো থাকলেও স্থায়ী সমাধান হয়নি।
আর পাঁচটা শিশুর মতো হাঁটতে না পারায় চিকিৎসকের পরামর্শে দেড় বছর বয়সে পায়ের অস্ত্রোপচারও হয়েছিল তার। এর পর স্বাভাবিক না হলেও কোনও রকমে হাঁটতে পারত শান্তনু। একটু বড় হতেই ছেলেকে স্থানীয় একটি স্কুলে ভর্তি করানো হয়েছিল। শুক্লাই ছেলেকে স্কুলে নিয়ে আসা যাওয়া করতেন। বছর ছয় স্কুলে পড়াশোনাও করেছে শান্তনু। কিন্তু বয়স বেড়ে যাওয়ায় শুক্লার পক্ষে নিয়মিত স্কুলে নিয়ে যাওয়া আসা সম্ভব হয়নি। ফলে পড়াশোনাটাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
লকডাউন শুরু হতেই সমস্যা আরও বৃদ্ধি পায়। নার্ভের সমস্যার জন্য ফের খিঁচুনি শুরু হয়। পায়ের পেশিশক্তির জোর কমে যাওয়ায় হাঁটাও পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এখন শান্তনু নিজে খেতেও পারে না। মাকেই ছেলের সব কাজ করে দিতে হয়। কয়েক বছর আগে ছেলেকে নিয়ে ভেলোরে গিয়েছিলেন শুক্লা এবং গৌরাঙ্গ।
পায়ের দ্রুত অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসক। এর জন্য প্রয়োজন ছিল কয়েক লক্ষ টাকা। কিন্তু অশোকনগরের গোলবাজারে রাস্তার ধারে বসে তেলেভাজা বিক্রি করা গৌরাঙ্গর পক্ষে ছেলের অস্ত্রোপচারের টাকা জোগাড় করা সম্ভব হয়নি।
শান্তনুর মা শুক্লা দাস বলেন, ‘ছেলে তো কিছুই করতে পারে না। ওর এই অসহায় অবস্থা দেখলে চোখে জল আসে। পায়ের অপারেশন করালে ও হাঁটতে পারবে বলে জানিয়েছিলেন ডাক্তারবাবু। কিন্তু সেই খরচ আমাদের পক্ষে জোগাড় করা সম্ভব নয়। কেউ যদি আমাদের সাহায্য করেন ছেলেটা হয়তো স্বাভাবিক জীবন পেতে পারে।’
সাহায্যের জন্য যোগাযোগ শুক্লা দাস: ৮৪৩৬৪৮৯১৯০