দুয়ারে সরকারের শিবিরে ডিম-ভাতের অস্বাভাবিক খরচ নিয়ে ‘এই সময়’-এ খবর প্রকাশিত হতেই কুড়মুন ২ পঞ্চায়েত অফিসে সংবাদমাধ্যমের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে নোটিস ঝোলানো হলো। বর্ধমান ২ ব্লকের এই পঞ্চায়েতেই ডিম-ভাতের চড়া বিল নিয়ে প্রধানের সঙ্গে বিরোধ তৈরি হয় উপপ্রধানের। অপমানিত হয়েছেন জানিয়ে বিডিওর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন প্রধান তারা মালিক।
তিনি দাবি করেছেন, তাঁর অনুপস্থিতিতে এই নোটিস ঝুলিয়েছেন উপপ্রধান বাসুদেব দে। যদিও এমন নোটিসের কথা অস্বীকার করেছেন উপপ্রধান। শনিবার তাঁকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করে হলে তিনি বলেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, এমন কোনও পোস্টার পঞ্চায়েতে লেখা নেই। দরজা খুলে দেবো, রাতে এসে দেখে যেতে পারেন।’ তাঁকে ছবির কথা জানানো হলে বলেন, ‘ওসব আপনাদের সাজানো।’
নিয়ে জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘বিডিওকে বলব, দ্রুত পদক্ষেপ করার জন্য।’ সূত্রের খবর, বিডিও সুবর্ণা মজুমদার খোঁজখবর করতেই সন্ধ্যায় নোটিসগুলি ছিঁড়ে দেন উপপ্রধান। বিডিও বলেন, ‘এটা করা যায় না। আমি খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ করছি।’
দুয়ারে সরকারের তৃতীয় শিবির থেকেই কর্মীদের খাবারের বিলে আপত্তি জানান প্রধান। উপপ্রধানের পেশ করা বিলে সই করতে আপত্তি জানান প্রধান তারা মালিক। এর পরেই তাঁকে বাসুদেব দে অপমান করেন বলে অভিযোগ। শনিবার সকালে সেই খবর প্রকাশিত হলে দেখা যায়, পঞ্চায়েত অফিসে সিঁড়ির পাশের দেওয়াল, সভাগৃহের প্রবেশপথে, প্রধান-উপপ্রধানের ঘরের সামনে নোটিস সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাতে লেখা ‘বিনা অনুমতিতে সংবাদমাধ্যমের প্রবেশ নিষেধ।’
এদিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে প্রধান তারা মালিক বলেন, ‘এর আগেও একবার এমন নোটিস লাগিয়েছিলেন উপপ্রধান। তখনও আমি অফিসে ছিলাম না। অফিসে এসে সেই নোটিস খুলিয়েছিলাম। কালও ফের এই কাজ করেছেন। আসলে সত্য প্রকাশিত হলে সব থেকে সমস্যায় তো উনিই পড়বেন, তাই হয়তো ভয় থেকে এটা করিয়েছেন।’
যোগাযোগ করা হয় জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার সংবাদমাধ্যমকে সমান গুরুত্ব ও সম্মান দেয়। ভুল তথ্য পরিবেশন করা হলে আমরা সভা-সমাবেশে দলগত ভাবে তার প্রতিবাদ জানাই। কিন্তু কখনই সংবাদমাধ্যমের অবাধ বিচরণে দল বা সরকার বাধা সৃষ্টি করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না। কুড়মুন ২ পঞ্চায়েতে কেন এমন হয়েছে, তার খোঁজ নিচ্ছি।’