ডাঃ মানস রায়। বাড়ি মেখলিগঞ্জ ব্লকের রানিরহাট এলাকায়। মানসের বাবা সুকুমার রায় জানিয়েছেন, ‘মানসের দিদি মাত্র ২৪ বছর বয়সে কঠিন অসুখে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। তখনই দিদি ভাইকে বলেছিলেন, আমার জীবন তো শেষের দিকে। আমি আর বেশিদিন বাঁচব না রে ভাই। কিন্তু তুই ডাক্তার হয়ে মানুষের জীবন বাঁচানোর কাজ করিস।” ভাইয়ের কাঁধে হাত রেখে দিদি বলেছিল,”ভাই তুই একদিন ডাক্তার হবি। আর মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবি।”
দিদির সেই স্বপ্ন আজ সার্থক হল।” মৃত্যু শয্যায় দিদির দেখা সেই স্বপ্ন আজ বাস্তব। রায় পরিবারে আজ খুশির সীমানা নেই, আরেকদিকে শোকের জলে ভিজছে চোখ। মাত্র ২৪ বছর বয়সেই চলে যাওয়া মেয়েটার কথা আজ বাবা মায়েরও বারবার মনে পড়ছে। তারই সঙ্গে ছেলের কৃতিত্বেও গর্বে ভরছে বুক।
পরিবার সূত্রে খবর, যদিও এই সাফল্যের পথ সহজ ছিল না। ২০১৭ সালে ধূপগুড়ির বৈরাতিগুড়ি হাইস্কুল থেকে ৯০ শতাংশের বেশি নম্বর নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন মানস। ২০১৫ সালে মাধ্যমিকেও দারুণ ফল করেন তিনি। প্রায় ৯৪% নম্বর নিয়ে আলোকঝাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ণ হন।
২০১৮ সালের সর্বভারতীয় নিট পরীক্ষায় তিনি বসেন। ওই বছরেই নিট পাস করে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ মেলে। ভর্তি হন কলকাতা মেডিকেল কলেজে। ডাক্তারি পড়া তো দূর, একসময় মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার পর্যন্ত টাকা ছিল না। সেই দুর্দিনে এগিয়ে এসে জামালদহের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পঞ্চপান্ডব। তারপর জীবনের অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়ে তিনি এমবিবিএস পাশ করেন। গত তিনদিন আগে ডাক্তারির ফল বেরোয়। তারপরই থেকেই গ্রামে খুশির হাওয়া। অদূর ভবিষ্যতে মানস ফিরবে এই গ্রামেই। দিদিকে দেওয়া কথা মতোই কাজ করবেন এখানকার মানুষের জন্য।
