বঙ্গে কতটা প্রভাব মোকার?
মৌসম ভবনের তরফে সতর্কতা জারি করে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ের মধ্যেই আন্দাজ করা সম্ভব হবে, কোনদিকে হতে পারে মোকার গতিপথ? কোন রাজ্যের উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে এই সাইক্লোন। আবহাওয়া সংক্রান্ত দু’টি মডেল গ্লোবাল ফোরকাস্টিং সিস্টেম (GSF) এবং ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর মিডিয়াম রেঞ্জ ওয়েদার ফোরকাস্টকে (ECMWF) ব্যবহার করা হচ্ছে বঙ্গোপসাগরে এই ঘূর্ণিঝড়ের গতিপ্রকৃতি অনুধাবন করতে।
কলকাতায় মোকার প্রভাব কতটা?
শনিবার একদিকে যখন ঘূর্ণবার্ত তৈরি হচ্ছে বঙ্গোপসাগরে, অন্যদিকে তখন এ শহরের আকাশও সকাল থেকেই মেঘলা। দিনভর এমনই পরিস্থিতি থাকার কথা জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। এখনও পর্যন্ত এ রাজ্যে মোকার প্রভাব সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দিতে পারেনি হাওয়া অফিস। তবে শোনা যাচ্ছে, আগামী ৯ মের আগে এ রাজ্যে ঘূর্ণিঝড়ের তেমন কোনও প্রভাব থাকবে না। বরং আগামী ৭২ ঘণ্টায় তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পাবে রাজ্য়ে। বাড়বে আর্দ্রতাজনিক অস্বস্তিও।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার কলকাতা শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি কম। শনিবার সর্বিনিম্ন তাপমাত্রা ২৭.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিক। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ৫১ থেকে ৮৫ শতাংশের মতো। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত হয়নি। শনিবারও ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই কলকাতায়।
শনিবার দক্ষিণবঙ্গের দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর এবং নদিয়াতে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বাকি জেলাগুলিতে বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস নেই। কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতে আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রা তিন থেকে পাঁচ ডিগ্রি পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।
তবে ভিজতে পারে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি। উত্তরবঙ্গের প্রতিটি জেলাতেই শনিবার বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া।
প্রস্তুত লালবাজার-কলকাতা পুরসভা
সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের কথা মাথায় রেখে শনিবারই বিশেষ কন্ট্রোল রুম খোলা হবে লালবাজারে। শহরের আবহাওয়াজনিত পরিস্থিতির উপরে নজরদারি চালাবে কলকাতা পুলিশ। ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে লালবাজারের তরফে শহরের সব থানা এবং ট্র্যাফিক গার্ডকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কলকাতা পুলিশের নিজস্ব বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং NDRF-কেও তৈরি রাখা হচ্ছে। বিদ্যুৎব্যবস্থা সচল রাখতে এবং ঝড়ের সময় কোনও খুঁটি থেকে খোলা তারে যেন বিপত্তি না বাড়ে তার জন্য CESC-কে বার্তা পাঠিয়েছে লালবাজার। সবরকম প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে কলকাতা পুরসভাও। ঝড়ের সময় গাছ ভেঙে পড়লেও তা দ্রুত সরিয়ে ফেলার জন্য পর্যাপ্ত বন্দোবস্ত রাখা হচ্ছে।