Anubrata Mondal Daughter : টাকা খাটানোর প্ল্যান সুকন্যারই, দাবি করল ইডি – anubrata mondal daughter sukanya mondal plan to transfer money claimed ed


এই সময়: তাঁর কিছুই জানা নেই! কী ভাবে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি হলো, কী ভাবে একের পর এক কোম্পানির মালিক হলেন, তা-ও জানেন না তিনি। অথচ, ইডি-র চার্জশিটে সুকন্যা মণ্ডলের বিরুদ্ধে অভিযুক্তদের যে বয়ান উঠে এসেছে, তাতে তাঁকে মোটেই গোবেচারা, নির্দোষ বলে মনে করছে না কেন্দ্রীয় সংস্থা।

গোরুপাচার মামলায় গ্রেফতার হয়ে বাবার মতোই তিহার জেলে বন্দি সুকন্যা। প্রাথমিক স্কুলে পড়িয়েও তিনি বিপুল ধন-সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ। সেই রহস্য খতিয়ে দেখতে গিয়ে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ব্যবসা থেকে সম্পত্তি, বাবা-মেয়ে একে অপরকে রীতিমত টেক্কা দিয়েছেন গত কয়েক বছরে।

ইডি-র অভিযোগ, গোরু পাচারের টাকা কোন কোন খাতে ইনভেস্ট করা হবে তার অনেকটাই ঠিক করতেন সুকন্যা নিজে। এমনকী, এও দাবি রোজকার ব্যবসা এবং ব্যাঙ্ক লেনদেনের বেশির ভাগই সামলাতেন তিনি। চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে, এএনএম এগ্রোচেম ফুডস প্রাইভেট লিমিটেড এবং নীর ডেভলপমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড নামে দু-দুটি কোম্পানির মালিক ছিলেন সুকন্যা মণ্ডলই।

Anubrata Mondal : স্বজনরাই বলছেন কেষ্ট নাকি কুজন!
মূলত এই কোম্পানিগুলির মাধ্যমে গোরুপাচারের টাকা খেটেছে বলে অভিযোগ। এ ছাড়াও অনুব্রতর পরিবারিক ব্যবসা ভোলে বোম রাইসমিল এবং শিব শম্ভু রাইস মিল দুটি কী ভাবে পরিচালনা করতে হবে, তার নির্দেশও দিতেন খোদ সুকন্যা। ইডির দাবি, জেরায় অনুব্রতর চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট মণীশ কোঠারি স্বয়ং এসব তথ্য তাদের জানিয়েছেন।

প্রথম দিকে ব্যবসার বিষয়ে অথবা টাকা কী ভাবে গচ্ছিত রাখতে হবে, তার কোনও ধারণাই ছিল না বাবা-মেয়ের। সেজন্য আর্থিক উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল মনোজ মাহনত নামে একজনকে। এই মনোজকে আবার অনুব্রত এবং সুকন্যার সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন মণীশ। তদন্তে উঠে এসেছে, এগ্রোচেম এবং নীর কোম্পানি কিনতে অনুব্রতকে সাহায্য করেন তিনি।

Sukanya Mondal Anubrata Mondal: কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি সুকন্যার, সরকারি নথিতে মিলল প্রমাণ
এর অল্প দিনের মধ্যেই টাকা পাচারের খেলা শিখে ফেলেন বাবা-মেয়ে। কী ভাবে, কোথায় বিনিয়োগ করতে হবে, কী ভাবে কোম্পানি খুলে টাকা সরানো যায়, তার প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। প্রথম দিকে অনুব্রত বিষয়টি দেখভাল করলেও, পরে মেয়ে ব্যবসার কন্ট্রোল পুরোপুরি নিয়ে নেন বলে চার্জশিটে ইডির দাবি। নথি ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, এম/এস এএনএম এগ্রোচেম ফুডস প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিটি কেনা হয়েছিল সুকন্যার নামে।

২০১৭-২০১৮ সালে মা ছবি মণ্ডলের সঙ্গে ওই সংস্থায় ৫০-৫০ শতাংশের শেয়ার ছিল সুকন্যার। আর এখন ওই কোম্পানিতে সুকন্যার শেয়ার যেখানে ৭৫ শতাংশ, সেখানে অনুব্রতর শেয়ার রয়েছে মাত্র ২৫ শতাংশ। সকলের চোখে ধুলো দিতে সংস্থার ‘ডামি ডিরেক্টর’ পদে দেখানো হয় তাঁদের বাড়ির পরিচারক বিদ্যুৎবরণ গায়েনকে।

Anubrata Mondal Sukanya Mondal: ‘অন্যায় হয়েছে…’, মেয়ে সুকন্যার গ্রেফতারির পর মুখ খুললেন অনুব্রত
১৯৯৫ সাল থেকে অনুব্রত মণ্ডলের পরিচারকের কাজ করতেন এই বিদ্যুৎবরণ। তাঁর নামে গাড়িও কেনা হয়। বিদ্যুতের নামে অ্যাকাউন্টও খুলে তার নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছে রেখে দেন সুকন্যা। ২০১৮-১৯ সালে জমা দেওয়া আয়করের তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে, ১ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা ব্যাঙ্কে জমা দেওয়া হয়েছে বিদ্যুতের নামে।

আবার ২০১৯-২০ সালেও জমা পড়েছে ৬৫ লক্ষ টাকা। বিদ্যুতের দাবি, তিনি কোনও কোম্পানি বা আয়করের বিষয়ে কিছু জানতেন না। সবই জানেন সুকন্যা এবং মণীশ কোঠারি। ওই দুজনই বিভিন্ন কাগজপত্রে তাঁকে দিয়ে সই করাতেন।

অন্যদিকে, নীর ডেভলপমেন্ট কোম্পানিতে সুকন্যার শেয়ার ছিল ৯১.৬৬ শতাংশ। ওই সংস্থায় কৌশলে যুক্ত করা হয়েছিল অনুব্রতর গাড়ির চালক তুফান মৃধাকে। ২০১৩ সাল থেকে অনুব্রত মণ্ডলকে চিনতেন তুফান। সেই সূত্রে সুকন্যাকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করতেন তিনি। এমনকী, বিভিন্নজনের সঙ্গে যখন ব্যবসার ডিল হতো, তখন তুফানের ২টি মোবাইল থেকেই কথা বলতেন সুকন্যা।

Sukanya Mondal News : বাবার সঙ্গে দেখা করতে দিন, ইডির কাছে আর্জি কেষ্ট-কন্যার
ওই মোবাইল এবং সিম কার্ডও তাঁকে কিনে দিয়েছিলেন কেষ্ট-কন্যাই। ইডির জেরায় ওই সব কোম্পানি এবং তাঁর পরিবারের আর্থিক লেনদেনের দায় অবশ্য অনুব্রত, সুকন্যা এবং মণীশের উপরেই চাপিয়েছেন তুফান। ইডির জেরায় অনুব্রত দাবি করেছেন, মণীশ শুধু চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট নন, তাঁর পারিবারিক বন্ধু ছিলেন।

সে কারণে সব কিছুই মণীশের উপরেই তিনি ছেড়ে দিয়েছিলেন। বাবার সুরেই বয়ান দিয়েছেন মেয়েও। কিন্তু মনীশ নিজের বয়ানে এসব কিছুর জন্যই পাল্টা দায়ী করেছেন অনুব্রত এবং সুকন্যাকে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *