মেদিনীপুরের এক সভায় কুড়মি আন্দোলনের বিরোধিতার ডাক দেওয়ার পাশাপাশি কুড়মি আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে ‘খালিস্তানি’ নেতাদের তুলনা টানেন অজিত মাইতি। এর পরিপ্রেক্ষিতে কুড়মি সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। কুড়মি রাজ্য সভাপতি রাজেশ মাহাতোর বক্তব্য, হকের দাবিতে লড়াই করলেই কেন শাসকের রোষের মুখে? তৃণমূল বিধায়কের মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন তিনি।
রাজেশ মাহাতো বলেন, “উনি যেটা বলেছেন, ওঁর মতো বর্ষীয়ান নেতার কাছ থেকে এটা কাঙ্ক্ষিত নয়। এই ধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্যে যদি অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হয় জঙ্গলমহলে, তার দায়িত্ব নিতে হবে অজিত দা’কেই।” এমনকি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন জঙ্গলমহলে আসেন, যথেষ্ট বিনয়ের সঙ্গে কথা বলেন, সেটা অজিত মাইতিকে অনুসরণ করা উচিত বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, তৃণমূলের একটি সভা থেকে তৃণমূল বিধায়ক অজিত মাইতিকে বলতে শোনা যায়, “কিছু স্বঘোষিত কুড়মি নেতা স্বঘোষিত খালিস্তানি নেতাদের মতো কুড়মি ভাইবোনেদের ভুল বুঝিয়ে… আমার ধারণা বিজেপি তাদের উস্কানি দিয়ে, সিপিএম তাদের উস্কানি দিয়ে দিল্লিতে কুড়মি ভাইদের আন্দোলন করতে দিচ্ছে না, যা করার এই বাংলাকে অশান্ত করার চক্রান্ত চলছে।” এই বক্তব্যের পরেই শুরু হয়ে যায় বিতর্ক।
মূলত, কুড়মালি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফশিলের অন্তর্ভুক্ত করা সহ তাঁদের জনজাতির একাধিক দাবি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন কুড়মি সমাজের প্রতিনিধিরা। একাধিক জায়গায় রাস্তা অবরোধ, রেল অবরোধ করে দফায় দফায় আন্দোলনের পথে নামতে দেখা যায় তাঁদেরকে।
এরই মাঝে জঙ্গল মহলের একাধিক জায়গায় রাজনৈতিক দলগুলোর দেওয়াল লিখন বনধের ব্যাপারে পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে কুড়মি সমাজের প্রতিনিধিরা। গ্রামের বাসিন্দাদের বাড়ির দেওয়ালে রাজনৈতিক প্রচারও বন্ধ করতে চান তাঁরা। ভোটের জন্য দেওয়াল দখল বন্ধ করতে দেওয়াল লিখেই হুঁশিয়ারি দিয়েছে কুড়মি সমাজ।
এই ঘটনার পরেই তৃণমূলের বিধায়কের কড়া প্রতিক্রিয়ায় শুরু হয় নতুন করে বিতর্ক। কুড়মি সমাজের প্রতিনিধিদের ‘খলিস্তানি’দের সঙ্গে তুলনা করায় বিতর্ক আরও বৃদ্ধি পায়। আগামী দিনে এই ইস্যুতে আবারও বড় আন্দোলন হতে পারে বলে আভাস শোনা যায় কুড়মি রাজ্য সভাপতির গলায়।