সম্প্রতি সব জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং সব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপাধ্যক্ষদের নিয়ে স্বাস্থ্যভবনের একটি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। অবিলম্বে এ ব্যাপারে সব হাসপাতালকে প্রস্তুতি সেরে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে। নয়া প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে জেলার রোগীদের আর ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে না। এতে বহু রোগীর চিকিৎসায় দেরি ঠেকানো যাবে বলে অনেক মৃত্যুও প্রতিহত করা যাবে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
বর্তমানেও ক্যান্সার চিকিৎসা মেলে বেশ কয়েকটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আরও কয়েকটি মেডিক্যাল কলেজে ক্যান্সার চিকিৎসার পরিষেবা চালু হয়েছে গত কয়েক মাসে। সেই হাসপাতালগুলিকে মাথায় (হাব) রেখেই বিভিন্ন জেলা হাসপাতাল ‘স্পোক’ হিসেবে পরিষেবা দিতে শুরু করবে। জেলা হাসপাতালের পরিকাঠামো ও পরিষেবার দিকটি সামলাবে ‘হাব’ হাসপাতাল ও তার বিশেষজ্ঞরা। আপাতত ঠিক হয়েছে, রাজ্যের সব জেলা হাসপাতাল ও নতুন মেডিক্যাল কলেজে মঙ্গল ও শুক্রবার, সপ্তাহে এই দু’দিন অঙ্কোলজি আউটডোরে ক্যান্সার রোগী দেখা হবে।
তবে সরাসরি ওই আউটডোরে ডাক্তার দেখানো যাবে না। সেখানে দেখা হবে তাঁদেরই, যাঁদের রেফার করা হয়েছে জেনারেল আউটডোর বা কোনও সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে। প্রয়োজনে রোগীকে ভর্তিও করা হবে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া বন্ধ হতে চলেছে রেফারের প্রথা। কী কী হবে নয়া প্রকল্পের অধীনে? স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, নতুন ক্যান্সার রোগী চিহ্নিতকরণের পাশাপাশি শল্য চিকিৎসা, কেমোথেরাপি ইত্যাদি সব পরিষেবাই মিলবে ইন্ডোর ওয়ার্ডে থাকাকালীন।
তবে রেডিয়েশন থেরাপির সুবিধে যেহেতু হাতেগোনা কয়েকটি হাসপাতালে আছে এবং সেই ব্যবস্থা সর্বত্র চটজলদি শুরু করা মুশকিল, তাই রেডিয়োথেরাপির প্রয়োজন আছে, এমন রোগীদের নির্দিষ্ট হাসপাতালে রেফার করা হবে। কিছু ক্ষেত্রে রেফার করা হতে পারে কিছু অত্যাধুনিক ডায়গস্টিক পরীক্ষার জন্য।
ক্যান্সার চিকিৎসার বাকি সব পরিষেবা মিলবে জেলাস্তরের হাসপাতালেই। এর জন্য প্রতিটি হাসপাতালকে মেডিসিন, সার্জারি, গাইনেকোলজি, ইএনটি, রেডিওলজি, ডেন্টাল সার্জারি, প্যাথলজি এবং রেডিওথেরাপির আট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়ে একটি অঙ্কোলজি টিম তৈরির কথাও বলা হয়েছে হাসপাতালগুলিকে। এই আট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে প্রতি সপ্তাহে একদিন করে ‘টিউমার বোর্ড’-এর বৈঠকে বসতে হবে। ওই বোর্ড হাসপাতালে ভর্তি ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসার প্রোটোকল ঠিক করে দেবে।