এবার পুরো বিষয়টি নিয়ে কড়া নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। যদি কোনও সরকারি শিক্ষক এবং শিক্ষিকাদের টিউশন করাতে দেখা যায় সেক্ষেত্রে তিন মাসের মধ্যে কড়া পদক্ষেপ করতে হবে, এমনই নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
এই পদক্ষেপে ঠিক কী প্রতিক্রিয়া শিক্ষকদের? পূর্ব মেদিনীপুর বরাবর মেধার নিরিখে এগিয়ে। সেখান থেকে একাধিক কৃতী সাফল্য অর্জন করেছেন। সংশ্লিষ্ট জেলার শিক্ষকদের প্রতিক্রিয়া ঠিক কী?
দশম শ্রেণির ছাত্রদের ইংরেজি পড়ান মনতোষ ভ্যুঁইয়া। কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশকে তিনি স্বাগত জানিয়েছেন। মনতোষ এদিন বলেন, “আমরা এই নির্দেশকে স্বাগত জানাচ্ছি। বহু বেকার যুবক-যুবতী, যাঁরা টিউশন পড়িয়ে উপার্জন করছেন তাঁদের অত্যন্ত উপকার হবে।”
তাঁর আরও সংযোজন, “টেস্ট এবং প্যাকটিক্যালে বেশি নম্বর পাওয়ার প্রলোভনে সাধারণত ছাত্ররা স্কুল শিক্ষকদের কাছে টিউশন পড়ে থাকে, যা অত্যন্ত অনুচিত। এটা কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”
অন্যদিকে, সরকারি স্কুলের শিক্ষকরাও অনেকে হাইকোর্টের এই রায়কে সমর্থন করেছেন। এই প্রসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর ২ ব্লকের বাঘাদাঁড়ি দেশপ্রাণ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শম্ভুনাথ সাহু বলেন, “হাইকোর্টের রায় অত্য়ন্ত যুক্তিযুক্ত। যদি সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা টিউশন পড়ান সেক্ষেত্রে একদিকে যেমন তাঁদের স্কুলে পড়ানোর আগ্রহের উপর প্রভাব পড়বে, তেমনই যাঁরা শুধুমাত্র টিউশনের উপর নির্ভরশীল তাঁরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।”
উল্লেখ্য, এখনও জেলায় জেলায় সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে গৃহশিক্ষকতার অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন সময়। এই বিষয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন ‘গৃহশিক্ষক কল্যণ সমিতি’। তাঁরা বিভিন্ন ছবি, ভিডিয়ো আদালতের সামনে তুলে ধরেন। যেখানে দেখা যায়, সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের বাড়ির সামনে সার দেওয়া সাইকেল। কোথাও কোথাও একাধিক জুতো। স্কুলের শিক্ষকদের থেকে কোচিং নেওয়ার জন্য রীতিমতো ভিড় জমান পড়ুয়ারা। ক্যামেরা দেখে অনেকে পালানোর চেষ্টা করেন অনেকে, কেউ আবার মুখ লোকান।
এই মামলার প্রেক্ষিতেই কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল, যে সমস্ত স্কুল শিক্ষক টিউশন করছেন তাদের বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক পদক্ষেপ করতে হবে। সরকারি নির্দেশ এড়িয়ে তাঁরা আর টিউশন করতে পারবেন না।