এর আগেও টাইগার হিল ঘোরার খরচ নিয়ে অভিযোগ তুলেছিলেন ট্যুর অপারেটররা। তাদের দাবি, টাইগার হিলে প্রথমে পার্কিং ফি বাবদ শুধু দশ টাকা দিতে হত। পরে বন দফতর ও জিটিএ ফি আদায় শুরু করতেই সেই খরচের সঙ্গে জুড়েছে মাথা পিছু ৭০ টাকা প্রবেশ মূল্য। ফলে পর্যটক ছাড়াও সব মিলিয়ে গাড়ি পিছু চালকদেরও এখন থেকে দিতে হচ্ছে ৮০ টাকা করে। অথচ সেই তুলনায় টাইগার হিলে পরিষেবা উন্নত হচ্ছে না বলে অভিযোগ পর্যটকদের একাংশেরও।
সম্প্রতি টাইগার হিলে জ্যামজট কমাতে কুপন ব্যবস্থা চালু করেছে প্রশাসন। টাইগার হিলে যেতে গাড়িকে আগে সংগ্রহ করতে হয় কুপন। সেই কুপন নিয়েও অসন্তুষ্ট গাড়ি চালক ও ট্যুর অপারেটররা। ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে দাবি, প্রতিদিন টাইগার হিলে যাওয়ার জন্য ৫৫০টি গাড়িকে কুপন দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে সন্ধে ছটার মধ্যে কার্শিয়াং, সুখিয়াপোখরি, দার্জিলিং সদর এবং জোড়বাংলো থেকে কুপন দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
দার্জিলিং অ্যাসোসিয়েশন অফ ট্রাভেল এজেন্ট-এর জেনারেল সেক্রেটারি প্রদীপ লামার বলেন, ”এই কুপন সিস্টেম তুলে দেওয়া উচিত।” তাঁর দাবি, ”বন দফতরের যে খাতে টাইগার হিলের জন্য টাকা নিচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। টাইগার হিলে কোনও আন্তর্জাতিক সীমান্ত নেই তাহলে কুপনের কী দরকার? ওখানে কোনও যদি কোনও অভয়ারণ্য থাকেই, তাহলে প্রজননের সময়ে ১৬ জুন থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর অবধি তো বন্ধ রাখা উচিত। তা তো হয়নি। বন দফতরের এই অভয়ারণ্যের নামে ফি নেওয়ার কোনও যুক্তিই নেই। এভাবে টাকা বেড়ে চললে দার্জিলিং শুধু টাকা দেওয়ার ট্যুরিস্ট স্পট হয়ে উঠবে। তাতে আগ্রহ হারাবেন পর্যটকেরা।” এর ফলে আদপে ট্যুর অপারেটর, গাড়ি চালক ও পর্যটন ব্যবসায়ীরা রোজগার হারাবেন বলে আক্ষেপ করেন প্রদীপ লামা।
অন্য এক ট্যুর অপারেটর বলেন, এমনিই কুপন চালুর পর অনেক ট্যাক্সি ড্রাইভাররা আর টাইগার হিল রুটে যেতে চাইছেন না। যদি কোনও কারণে পর্যটকেরা ট্যুর ক্যানসেল করেন তাহলে আবার কুপন ফেরানোরও ব্যবস্থা নেই। এইসব ঝক্কির জেরেও আরও জটিল হয়ে উঠেছে টাইগার হিল ভ্রমণ।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সাল থেকেই কুপন সিস্টেম শুরু হয় টাইগার হিলে। শুরুতে এই কুপনের জন্য আলাদা কোনও টাকা লাগত না। কিন্তু, পরে বন দফতর মাথা পিছু ৫০ টাকা চার্জ এর সঙ্গে যুক্ত হয়। খরচ আরও বাড়ে ২০২২ সালে। এর সঙ্গে জোড়ে জিটিএ-এর ২০ টাকা চার্জ। যদিও বন দফতরের অধিকর্তার দাবি, গোটা ভারতে অভয়ারণ্যে প্রবেশের ক্ষেত্রেই এই ফি দিতে হয়।