ডুয়ার্স ব্রাঞ্চ ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন বা DBITA-এর সম্পাদক সঞ্জয় বাগচির সঙ্গেও তাঁর নিবিড় সম্পর্ক ছিল। ফলে ডুয়ার্সের বিন্নাগুড়িতে DBITA-তে এলেই সঞ্জয় বাবুর কাছে কঁচি পাঠার মাংস খাবার আবদার করতেন তিনি। ভোজন রসিক সাহিত্যিককে খাওয়ানোতে কোনও কার্পন্য করতেন না সঞ্জয় বাগচি।
কিন্তু এবার আর আসবেন না সমরেশ মজুমদার। এবার আর আবদার পূরন করার জায়গা থাকল না সঞ্জয়বাবুর। গয়েরকাটা চা বাগানে বেড়ে ওঠা এই সাহিত্যিকের প্রয়ানে শোকস্তব্ধ গোটা ডুয়ার্স।
ডুয়ার্সের লেখক পার্থপ্রতিম বসু স্মৃতি রোমন্থন করে জানান, “জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ হলে বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসে আমার লেখা দেখে সমরেশবাবু বলেছিলেন ‘একটু অন্যরকম লেখা, চালিয়ে যাও।” সমাজ সচেতনতামূলক কাজে ব্যতিক্রমী অবদানের জন্য পার্থপ্রতিমের হাতে ‘কিরতভূমি স্মারক সম্মান’ তুলে দিয়েছিলেন কালপুরুষের কথাকার সমরেশ মজুমদার।
সেই থেকেই প্রথম মুখোমুখি আলাপচারিতা। পার্থপ্রতিমের লেখা হৃদরোগ সংক্রান্ত বই ‘হৃদয়ের কথা’ কলকাতা বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছিল। সেই বই সমরেশ মজুমদারকেও দিয়েছিলেন তিনি। জলপাইগুড়ি বৈকুন্ঠপুর রাজবাড়ী নিয়ে উপন্যাস লেখার ইচ্ছে প্রকাশ করে ইতিহাস গবেষক উমেশ শর্মার কাছে তথ্যও চেয়েছিলেন সমরেশ মজুমদার।
কিন্তু উপন্যাস লেখা আর হল না। সাহিত্যিককে সাহায্য করতে না পেরে আক্ষেপ থেকে গেল জলপাইগুড়ির ইতিহাস গবেষক উমেশ শর্মার। জেলা স্কুলের ছাত্র ছিলেন সমরেশ মজুমদার। জলপাইগুড়ি শহরের হাকিমপাড়ার বাড়ি থেকে জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলে পড়াশোনা করতেন সমরেশ মজুমদার। ছেলেবেলা কেটেছে জলপাইগুড়ি জেলার গয়েরকাটা চা বাগানে।
ওই চা বাগানেই কাজ করতেন ঠাকুরদা। সেই সময়ে গয়েরকাটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। এরপর সেখান থেকে জলপাইগুড়ির হাকিমপাড়ায় চলে আসেন। ২০০৯ সালে সমরেশ মজুমদার পুরসভার চেয়ারম্যান ও ইতিহাস গবেষক তথা লেখক উমেশ শর্মার আমন্ত্রণে জলপাইগুড়িতে আসেন।
জলপাইগুড়ি পুরসভার ১২৫ বছর উপলক্ষ্যে বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে পুরসভার প্রয়াস হলে যোগ দেন। ২০১৮ সালে তিনি ফনিন্দ্রদেব বিদ্যালয়ের ১০০ বছর পুর্তি উপলক্ষ্যে বইমেলায় অংশ নিতে এসেছিলেন জলপাইগুড়িতে।