রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে সোমবার রাতে ঝটিতি সফরে কলকাতায় এসেছিলেন অমিত শাহ। মঙ্গলবার সকালে তিনি জোঁড়াসোকো ঠাকুরবাড়িতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথের মূর্তিতে মালা দেন। বিকেলে সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়ামে ‘খোলা হাওয়া’ নামে বিজেপি প্রভাবিত একটি সংগঠনের ‘আমাদের রবীন্দ্রনাথ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন।
সেখানে শাহ বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মাতৃভাষায় শিক্ষার উপর জোর দিয়েছিলেন। কারণ, যে শিশু মাতৃভাষায় কথা বলতে পারে না, পড়তে পারে না, তার বিচার করার ক্ষমতা থাকবে না। তাই জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রধানমন্ত্রী মাতৃভাষার উপরই জোর দিয়েছেন।’ কেন্দ্রের শিক্ষানীতিতে রবি ঠাকুরের প্রভাব বোঝাতে গিয়ে তিনি এক সময়ে বলেন, ‘শান্তিনিকেতনে যে শিক্ষনীতি গুরুদেব শুরু করেছিলেন, তা শুধু বাংলার বা দেশের নয়, গোটা বিশ্বের কাছে দৃষ্টান্ত।
মুখস্থ বিদ্যা নয়, প্রাচীন ভারতীয় সংস্কৃতি এবং অধুনিক বিজ্ঞানের সংমিশ্রণ তিনি শান্তিকেতনে ঘটিয়েছিলেন। এটাই আমাদের শিক্ষানীতি। আমি জীবনে দু’বার শান্তিনিকেতন গিয়েছি। এবং রবি ঠাকুরের শান্তিনিকেতন নিয়ে বিস্তর লেখাপড়া করেছি।’ যদিও তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘জাতীয় শিক্ষানীতি খতিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিন্তা মতো শিক্ষানীতি তৈরি হয়নি। আমরা রাজ্য সরকারের তরফে আপত্তি জাতীয় শিক্ষানীতি প্রসঙ্গে আপত্তি জানিয়েছি। রবি ঠাকুরের হাতে গড়া শাম্তিনিকেতন নয়, মার্কিন শিক্ষানীতিকে অনুসরণ করে কেন্দ্রীয় সরকার নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি তৈরি করেছে।’
২০২০-তে কেন্দ্রীয় সরকার নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি প্রবর্তন করে। তারপর থেকেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। দেশের বহু রাজ্য এখনও মোদী সরকারের নয়া শিক্ষানীতি মানতে চাইছে না। দেশের শিক্ষাবিদদের একাংশের অভিযোগ, ‘সব বেদে আছে’ বলে পাঠ্যক্রম বদলে দেওয়া হচ্ছে, যা পুরোপুরি অবৈজ্ঞানিক। অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির ব্যাখ্যা, অর্থের বিনিময়ে আসলে বেসরকারি শিক্ষার পথ প্রসারিত করার বার্তাই দেওয়া হয়েছে মোদী সরকারের নয়া জাতীয় শিক্ষানীতিতে।