মহিলা সহ দুজনকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় অনামিকা দাস নামক ওই মহিলার। পাশাপাশি আত্মহত্যার চেষ্টা করা অনিল মাহাতোকে ভর্তি করে শুরু হয় চিকিৎসা।
ক্রমশ তাঁর অবস্থার অবনতি হলে, তাকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে নবদ্বীপ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে ঘটনাস্থল খড়ের মাঠের ওই গৃহবধূর বাড়ি থেকে অভিযুক্ত অনিল মাহাতোর ব্যবহৃত একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও রক্তমাখা ছুরি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, নবদ্বীপ ব্লকের মহিশুরা গ্রাম পঞ্চায়েতের খড়ের মাঠ এলাকার বাসিন্দা অনিল মাহাতো নামক ওই ব্যক্তির সঙ্গে দীর্ঘদিনের পরিচয় ছিল অনামিকা দাস নামক ওই গৃহবধূর। জানা যায়, পরিচয় সূত্রে ক্রমশ তাদের মধ্যে একটি সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সম্প্রতি সেই সম্পর্কে ছেদ পড়তে শুরু করে।
ক্রমশ সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন মৃত অনামিকা দাস। যদিও বা অভিযুক্ত অনিল মাহাতো অনামিকা দাসের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছিলেন না। তাই ক্ষিপ্ত হয়ে বুধবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ প্রতিবেশী ওই গৃহবধূর বাড়িতে একেবারে আটঘাট বেঁধে আগ্নেয়াস্ত্র, একটি ধারালো ছুড়ি ও দড়ি নিয়ে পৌঁছে যান।
এরপর অনামিকা দাসকে লক্ষ্য করে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি চালান। গুলি চালালেও তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এরপর ধারালো ছুরি বের করে দু’বার অনামিকা দাসের পেটে চালিয়ে দেন। রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরেই লুটিয়ে পড়েন অনামিকা। এরপর ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পাশেই একটি আমগাছে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন অভিযুক্ত অনিল।
স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে অনিল মাহাতোকে গাছ থেকে তড়িঘড়ি উদ্ধার করে। পাশাপাশি অনামিকা দাসের চিৎকারে স্থানীয়রা তাঁর ঘরে ঢুকে তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন। খবর দেওয়া হয় স্থানীয় পুলিশকে।
খবর পেয়ে নবদ্বীপ থানার পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে ছুটে যায়।। দুজনকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই বিষয়ে এক প্রতিবেশী জানান, “মৃত অনামিকা দাসের স্বামী উজ্জ্বল দাস একজন নির্মাণ শ্রমিক। প্রতিদিনের মতো এদিনও সাত সকালে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সকাল ন’টা নাগাদ স্থানীয়দের কাছ থেকে ঘটনার বিষয়টি জানতে পেয়ে তড়িঘড়ি বাড়িতে ফিরে আসেন।”
পরে নবদ্বীপ হাসপাতালে দাঁড়িয়ে অভিযুক্ত অনিল মাহাতোর কঠিন শাস্তির দাবি তোলেন তিনি। বলেন, “আমি লোকটিকে অনেকবার বারন করেছিলাম। কিন্তু সে শোনেনি। আমার স্ত্রী’ও ওই ব্যক্তিকে আসতে বারন করেছিল আমাদের বাড়িতে।”
বিকেলে অভিযুক্ত অনিল মাহাতোর বিরুদ্ধে সরাসরি খুনের অভিযোগ দায়ের করেন মৃত অনামিকা দাসের স্বামী উজ্জ্বল দাস। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।