Jaldapara National Park : সঙ্গিনী দখলের লড়াইয়ে দুই গন্ডার, টহলে বেরিয়ে জখম কুনকি – mahout back broken by two male rhinoceros fighting beat officer injured after falling from elephant back


এই সময়, আলিপুরদুয়ার: জঙ্গলে রুটিন টহলে বেরিয়ে বড় বিপত্তি জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে। সঙ্গিনী দখলের লড়াই উন্মত্ত দুই পুরুষ গন্ডারের রোষে পড়ে কোমর ভাঙল মাহুতের, হাতির পিঠ থেকে মাটিতে আছড়ে পড়ে জখম হলেন বিট অফিসার ও পাতাওয়ালা। গন্ডারের আক্রমণে সামান্য আহত হয়েছে কুনকি হাতি দিগম্বর। বুধবার ভোরে দুর্ঘটনাটি ঘটে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের পূর্ব রেঞ্জের মালঙ্গি বিটের শিশামারার জঙ্গলের গভীরে।

Bison Attack : বাইসনের হানায় জখন ৫ গ্রামবাসী
প্রতিদিনের মতোই বুধবার কাকভোরে দিগম্বরের পিঠে চেপে জঙ্গল পাহারার কাজে বেরিয়েছিলেন বিট অফিসার মন্টু দাস, মাহুত স্বপন ওঁরাও ও একজন পাতাওয়ালা। শিশামারার কাছে জঙ্গল ফুঁড়ে এগোতেই তাঁরা মাটির কম্পন অনুভব করেন। সেই সঙ্গে ভেসে আসে ভারী কিছু মাটিতে আছড়ে পড়ার শব্দও। সামনে ঠিক কী চলছে, তা অনুমান করতে না পেরে, মাহুতের নির্দেশে চলার গতি বাড়ায় দিগম্বর।

Leopard Attack : গাছের মগডালে বসে ওটা কী! ভরদুপুরে আতঙ্কে কাঠ গ্রামবাসীরা
প্রায় তিনশো মিটার পার হতেই চোখ কপালে ওঠে সকলের। ভোরের আবছা আলোয় তাঁরা লক্ষ্য করেন, পাশেই দাঁড়িয়ে এক নধর মাদি গন্ডার। আর তাকে কাছে পেতে তুমুল লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে দুই মত্ত পুরুষ গন্ডার। পরস্পরের আঘাতে তখন দু’জনের দেহ থেকেই ঝরছে রক্ত। বিষয়টি নজরে আসতেই দুই পুরুষ গন্ডারকে তাড়িয়ে দিতে উদ্যত হন বনাধিকারিক ও মাহুত। কিন্তু বিপদের গন্ধ আঁচ করে পিঠটান দিতে শুরু করে দিগম্বর। হাতির পিঠে সওয়ার তিন জনের বিকট হল্লায় মাথায় যেন রক্ত চড়ে যায় দুই পেল্লায় গন্ডারের। কেউ কিছু অনুমান করার আগেই তারা দু’জন ধেয়ে এসে দিগম্বরকে আক্রমণ করে বসে।

আত্মরক্ষার স্বার্থে ওই কুনকি হাতি তখন দিগ্বিদিক হুঁশ হারিয়ে ছুটতে শুরু করে। আর তাতেই দেহের ভারসাম্য হারিয়ে মাটিতে আছড়ে পড়েন দিগম্বরের পিঠে বসে থাকা মাহুত, বিট অফিসার ও পাতাওয়ালা। বরাতজোড়ে, ততক্ষণে সেখান থেকে চম্পট দিয়েছে জোড়া গন্ডার। তাই বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পান সকলে। তবে কোমরের হাড় ভেঙে যায় মাহুত স্বপন ওঁরাওয়ের।

Elephant Attack : হাতির হানায় ভেঙে পড়ল মাটির দেওয়াল, চাপা পড়ে মৃত ১
জখম হন বিট অফিসার মন্টু দাস ও পাতাওয়ালা। তাঁরাই কোনও ক্রমে মাহুতকে ফের দিগম্বরের পিঠে তুলে নিয়ে আসেন মালঙ্গি বিট অফিসে। সেখান থেকে সরাসরি তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে। আঘাত সামান্য হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয় পাতাওয়ালাকে। আপাতত বিট অফিসার ও মাহুত হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ঘটনায় জঙ্গল টহলে যাওয়া বনকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

Alipurduar Tourism : এখনও হয়নি উদ্বোধন, চিলাপাতার সেলফি পয়েন্টে ভিড় বাড়ছে পর্যটকদের
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাহুত বলেন, ‘জঙ্গল পাহারার সময় আমরা যে হাতির পিঠে উঠি, তাতে কোনও গদি অথবা লোহার ঘেরাটোপের ব্যবস্থা থাকে না। শুধুমাত্র হাতির শরীরে জড়ানো মোটা দড়ির ভরসায় দেহের ভারসাম্য রাখতে হয়। অথচ পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য বন দপ্তর হাতি সাফারির সময় হাতির পিঠে লোহার খাঁচা ও গদির ব্যবস্থা করে। এক যাত্রায় পৃথক ফল হলে তো বিপদ ঘটবেই।’

বিষয়টি নিয়ে জলদাপাড়া বনবিভাগের ডিএফও দীপক এমের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘জঙ্গলে টহলরত বনকর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে ভাবছি। তবে গন্ডার যুগল ফিরে না গিয়ে ফের আক্রমণ করলে বড় বিপত্তির আশঙ্কা ছিল। জখমদের চিকিৎসার সব দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *