অনেকেই রাস্তাঘাটে হটাৎ এই ধরনের লাইভ কোন মুহুর্তের ভিডিয়ো দেখে চমকে ওঠেন। শেষ পর্যন্ত সেই ভিডিয়ো দেখে, ভালো-মন্দ মন্তব্য করেন। সেই ভিডিয়ো বানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার নাম-অর্থ কামান ক্রিয়েটররা। তবে গোটা গল্পটাই আগে থেকে সাজানো থাকে, এই গল্প অধিকাংশ মানুষের কাছে অজানা,আজ সেই গল্প ধরা পড়ল।
অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছিল প্র্যাঙ্কবাজ অয়ন। বারাসতের অন্ধ দম্পতিকে নিয়ে ভিডিয়ো বানানোর পরিকল্পনা করে সে। এই দম্পতি দুজনেই দৃষ্টিশক্তিহীন। তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় ধুপকাঠি বিক্রি করে কোনমতে সংসার চালান। মাসিক আয় খুব বেশি হলে ৩-৪ হাজার টাকা। অয়ন ও তাঁর দিদি আগে থেকেই এদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। ভিডিয়োর বিনিময়ে ১০ হাজার টাকা দেওযার কথাও বলা হয়। এর পাশাপাশি ভিডিয়োতে সকল ভিউয়ারসদের বলা হবে তাদের ব্যাঙ্ক একাউন্টে কিছু কিছু করে হলেও সাহায্য করতে, যাতে তাঁদের আর কাজ করে খেতে না হয়।
জানা গিয়েছে, ভিডিয়োর জন্য দৃষ্টিশক্তিহীন দম্পতির কাছে থাকা ধুপকাঠি ভেঙে দেবে অয়ন। পরিকল্পনা মাফিক শ্যুটিংয়ের জন্য বারাসত কালীকৃষ্ণ স্কুলে সামনের রাস্তা বেছে নেওয়া হয়। যখনই এমনই উত্তেজনামুখর পরিস্থিতি হয়, তখন স্থানীয়রা প্রতিবাদ করতে এগিয়ে আসে ,শুরু হয় বচসা এবং ধাক্কাধাক্কি। গোটা ঘটনার চিত্রনাট্য আগে থেকে তৈরি থাকলেও শ্যুটিংয়ের সময় পরিস্থিতি বদলে যায়।
আজ আর কোনওভাবেই মানানো যায়নি উত্তেজিত জনতা। যখন তাঁরা জানতে পারে এই ভিডিয়ো ওই অন্ধ দম্পতিদের সাহায্য করতে বানানো হচ্ছে, তখন তা ডিলিট করার জন্য ইউটিউবারকে জোর দেওয়া হয়। এমনকী তাঁর দেড় লাখ টাকা দামের ফোন নিয়ে টানাটানি শুরু হয়। খবর পেয়ে বারাসত থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।
পুলিশ যখন বোঝে গোটা বিষয়টি আগে থেকেই পরিকল্পনা করে করা এবং এই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্লাটফর্ম আসলেই তাদের অর্থনৈতিক সাহায্য করতেই এই ধরনের ভিডিয়ো বানাচ্ছে তখন তাদের কাছ থেকে লিখিত নিয়ে ছেড়ে দেয়। কিন্তু, যাদের সঙ্গে এই বচসা বা ধাক্কাধাক্কি, তাঁদের দাবি এই ভিডিয়োতে তাদেরকে যেন না দেখানো হয়। সেইমতো লিখিত দিতে হবে। তাঁদেরকে যদি বাদ দেওয়া হয় তাহলে এই প্র্যাঙ্ক ভিডিয়োর সার্থকতাই নেই। কিন্তু শেষমেষ অয়ন সহ তার দিদি লিখিত থানায় দিয়েই মুক্তি পায়। ইউটিউবারের মতে, ‘এই অভিজ্ঞতা আমার নতুন নয়। আগেও হয়েছে। তবে আজ একটু বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে গিয়েছে।’