স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আট বছর আগে একই পঞ্চায়েত এলাকার হাতামারি গ্রামের প্রভাস নস্করের মেয়ে অনিমার সঙ্গে বিয়ে হয় দুমকি গ্রামের কার্তিক বিশ্বাসের। দম্পতির এক পুত্র সন্তান রয়েছে। বুধবার প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের মাতৃমাতে ভর্তি হন অনিমা। বৃহস্পতিবার সকালে এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন তিনি।
পুত্র সন্তান জন্ম হয়েছে জানতে পেরে খুশির বন্যা বয়ে যায় বিশ্বাস ও নস্কর পরিবারে মধ্যে। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিবারের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। বৃহস্পতিবার রাত ১০ টা নাগাদ হঠাৎ মৃত্যু হয় ওই প্রসূতির।
পাশাপাশি, সদ্যোজাত সন্তানের অবস্থাও সঙ্কটজনক হয়ে পড়ে। প্রসূতি মৃত্যুর খবর পেয়ে নস্কর ও বিশ্বাস পরিবারের অন্যান্য সদস্য সহ এলাকার শতাধিক লোকজন রাতেই মাতৃমার সামনে জড়ো হয়। সেখানে চিকিৎসার গাফিলতি তুলে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সহ চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতালের অন্যান্য কর্মীদের ওপর ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। গভীর রাতে এমন ঘটনায় ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার খবর পেয়ে ক্যানিং থানার আইসি সৌগত ঘোষের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী হাজির হয়। ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সামনে তখন তুমুল উত্তেজনা। দীর্ঘ প্রায় দু’ঘন্টার চেষ্টায় মৃতের পরিবার পরিজনদেরকে আশ্বস্থ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
অন্যদিকে, সদ্যোজাত শিশু সন্তানের শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক হলে ক্যানিং থানার পুলিশের উদ্যোগে সদ্যোজাতকে কলকাতার হাসপাতালে পাঠানো হয় চিকিৎসার জন্য। প্রসূতির মৃতদেহ তার পরিবারের লোকজন নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা না দেওয়ায় তারা মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
মৃতের পরিবারের লোকজন থানায় কোনও অভিযোগ না করলেও তাঁদের দাবি, ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের মাতৃমাতে কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স সহ অন্যান্য কর্মীরা রোগীর পরিবার পরিজনদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত দুর্ব্যবহার করে থাকে। ঠিকমতো চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয় না।
জোরপূর্বক টাকা-পয়সা নিয়ে অযথা হয়রানি করা হয়। যার ফলে প্রায় প্রতিদিনই শিশু মৃত্যু সহ প্রসূতি মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে বলে অভিযোগ। তবে এ বিষয়ে হাসপাতালের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ক্যানিং এসডিপিও দিবাকর দাস ৷