প্রবীর চক্রবর্তী: রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রা নাকি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডি শিবকুমার কৌশল কোন ম্যাজিকে কর্নাটক দখলের পথে কংগ্রেস তা সময়েই বলবে। তবে কর্নাটকে মোদী-শাহর প্রচার মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়েছে। বিজেপির রথের চাকা আটকে গিয়েছে কর্নাটকের মাটিতে। কংগ্রেস এগিয়ে ১৩৫ আসনে। এনিয়ে এবার সরব হলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
আরও পড়ুন-মোদীর জয়রথ থমকাল কর্নাটকে! নয়া মন্ত্রেই কিস্তিমাত রাহুলের…
তৃণমূলের জন সংযোগ যাত্রায় বেরিয়ে অভিষেক এনিয়ে বলেন, আমাদের নেত্রী নিজে কর্নাটকের মানুষের প্রতি আবেদন করেছিলেন, বিজেপিকে হারাতে যাকে ইচ্ছে ভোট দিন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এটা খুব স্পষ্টভাবে বলেছিলেন। বাংলায় একটা অভিযান চলেছিল, নো ভোট টু বিজেপি। কার্যত সেটাই এখন কর্নাটকে। এই যে ধর্মের সুড়সুড়ি, বিচ্ছিন্নতাবাদের রাজনীতি, মানুষকে বিভ্রান্ত করে এই যে ধর্মের ভিত্তিতে প্রচার, লাভ জিহাদ, মানুষ কী খাবে, কী পরবে এসব কখনও রাজনীতির প্রচার হতে পারে না। রাজনৈতিক ইস্যুর সামনের দিকে থাকবে রাস্তাঘাট, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান এসব। এনিয়ে বিজেপির মুখে কোনও কথা নেই। বিজেপি বারবার ধর্মের নামে মানুষকে ভুল বুঝিয়েছে। ধর্মের রাজনীতির প্রত্যাখান করার শুরু হয়েছিল বাংলার মাটিতে। ২০২১ সালে বিজেপির অশ্বমেধের ঘোড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একা হাতে আটকে দিয়েছিললেন। অমিত শাহ তো বলেছিলেন, দেড়শো সিট নিয়ে বাংলায় ক্ষমতায় আসব। কর্নাটকে তা উল্টে গিয়েছে। মানুষের পালস এরা বোঝে না। বাংলার মানুষ হিসেবে আমরা গর্বিত যে বাংলা যে পথটা দেখিয়েছিল সেটা কর্নাটকের মানুষ অনুসরণ করেছে। মহামতি গোখলে যা বলেছিলেন তা ফলে গেল। বাংলা যেটা ২০২১ সালে করেছিল কর্নাটক তা ২০২৩ সালে করে দেখাল। আর গোটা ভারত তা ২০২৪ সালে তা করবে। এই বিশ্বাস আমার রয়েছে। এদের পতনের শুরু হয়ে গিয়েছে। যাওয়া শুধু এখন সময়ের অপেক্ষা।
কংগ্রেস মুক্ত ভারতের কথা বলে থাকে বিজেপি। কিন্তু কর্নাটক ভোটের ফলে দেখা যাচ্ছে রাজ্য থেকেই যেতে বসেছে বিজেপি। এই ফল নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় আরও বলেন, গত ৫ বছর রাজ্যের বারোটা বাজিয়েছে বিজেপি। ডবল ইঞ্জিন বলে ওরা গলা ফাটায়। ওরা তো গত ৫ বছৎ কর্নাটক, মণিপুরে ক্ষমতায় তাহলে মণিপুরে আগুন জ্বলছে কেন? ডবল ইঞ্জিনের সরকারকে ৫ বছর দেখার পর কেন মানুষ প্রত্যাখান করল? আসলে এটা ডবল ইঞ্জিনের সরকার নয়, ট্রাবল ইঞ্জিনের সরকার। এই সরকারকে মানুষ আর চায় না। যে কথা দিয়ে কথা রাখবে তার পাশেই মানুষ দাঁড়বে। এটাই ঠিক করছেন সাধারণ মানুষ। মোদী এতদিন যা বলেছেন তার কোনওটাই কিছু করেছে? মানুষকে পরিষেবা দিচ্ছে তৃণমূল। মানুষ বিভাজনের রাজনীতি চায় না। অনেক আগেই এসব প্রত্য়াখ্যান করেছে মানুষ। এর থেকে পরিত্রাণ চাইছে আমজনতা। কর্নাটকের মানুষের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। কর্নাটকের মানুষ বিজেপিকে ল্য়াজেগোবরে করেছে।
এদিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও শুভেচ্ছাবার্তা দিলেন কর্নাটকের জয়ে। মমতা বলেন, পরিবর্তনের পক্ষে নির্ণায়ক জনাদেশের জন্য কর্নাটকের জনগণকে প্রণাম। একনায়কন্ত্র ও সংখ্যাগরিষ্ঠবাদী রাজনীতি পরাজিত হয়েছে! মানুষ যখন বহুত্ববাদ ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে জয়ী করতে চায়, তখন আধিপত্য বিস্তারের কোনও কেন্দ্রীয় শক্তি তাদের স্বতঃস্ফূর্ততাকে দমন করতে পারে না। এটাই নীতিকথা এবং আগামীর জন্য শিক্ষা।