বাংলায় ঘূর্ণিঝড়ের কী প্রভাব?
তবে বাংলায় এর কতটা প্রভাব পড়বে? এ রাজ্যের মোকা ঘূর্ণিঝড়ের জেরে কি আদৌ ঝড়-বৃষ্টি নামবে? এ প্রশ্নই ছিল সকলের মাথায়।
প্রাথমিকভাবে ঘূর্ণিঝড় মোকা তৈরির সময় এ রাজ্য থেকে জলীয় বাষ্প শুষে নেওয়ায় আবহাওয়ায় বিরাট পরিবর্তন এসেছিল। জেলায় জেলায় তাপপ্রবাহ, আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি এবং তাপমাত্রার পারদ ক্রমশই ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছিল। স্বস্তির বৃষ্টির জন্য কার্যত চাতক পাখির মতো অপেক্ষায় ছিল রাজ্যবাসী।
সেই সুখবরই দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। শনিবার থেকেই হাওয়া বদলের পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। বর্তমানে ঘূর্ণিঝড় মোকা মধ্য বঙ্গোপসাগরে ফুঁসছে। বাংলাদেশ এবং মায়ানমারে পৌঁছনোর আগে তা আরও শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। তবে তার জেরে বাংলায় জেলাগুলি স্বস্তির বৃষ্টিতে ভিজবে।
কোন কোন জেলায় বৃষ্টি?
জানা গিয়েছে, শনিবার থেকেই ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে। দমকা হাওয়াও বইবে উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে। ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া এবং বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে IMD।
বৃষ্টি হবে উত্তরবঙ্গের মালদা, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, কালিম্পং, দার্জিলিঙে। ১৪ এবং ১৫ তারিখ থেকে বৃষ্টি বাড়বে উত্তরবঙ্গে। শুধু তাই নয়, আগামী তিনদিন দুই বঙ্গেই তাপমাত্রা নতুন করে বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই।
এদিকে, ঘূ্র্ণিঝড় মোকার আগাম সতর্কতা হিসেবে শনিবার সকাল থেকেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের উপকূল থানা থেকে মাইকে প্রচার শুরু হয়েছে। এদিন সকাল থেকে কুলতলি থানার কৈখালি, মাতলা নদীতে NDRF এর পক্ষ থেকে মকড্রিল করা হয়।সঙ্গে নদী এলাকায় বসবাসকারী গ্রামেও করা হয় মাইকিং। কুলতলি ও মৈপিঠ থানার পক্ষ থেকে এলাকার মানুষকে সাবধান করা হয়েছে। উপকূলীয় গ্রামগুলির পাশাপাশি নদীপথে ও লঞ্চের মাধ্যমে কোস্টাল থানার পক্ষ থেকে প্রচার করা হচ্ছে। কুলতলি ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে শুকনো খাবার, ত্রিপল মজুত করা হয়েছে। সুন্দরবনের প্রতিটি এলাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিশেষ বন্দোবস্ত করা হয়েছে দিঘা উপকূলেও। হোটেলে থাকা পর্যটকদের সমুদ্রে যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক করা হচ্ছে। মাইকে প্রচার চালানো হচ্ছে। মোতায়েন রয়েছে NDRF টিম।
বর্তমানে মোকার অবস্থান
গত ছয় ঘণ্টায় প্রবল গতিতে এগিয়েছে মোকা। এটি ইতিমধ্যেই অতি প্রবল শক্তিশালী ঘুর্নিঝড়ের রূপ নিয়েছে শনিবার ভোর সাড়ে পাঁচটায়। সম্ভাব্য ল্যান্ডফল লোকেশন মায়ানমারের সিতওয়ে সমুদ্র বন্দর। সেখান থেকে মোকার বর্তমান দুরত্ব ৬৯০ কিলোমিটার। বাংলাদেশের কক্সবাজারের থেকে মোকার দুরত্ব ৭৬০ কিলোমিটার। সমুদ্র পৃষ্ঠের ওপর দিয়ে আরও জলীয় বাষ্প সংগ্রহ করতে করতে মোকা এগিয়ে চলেছে। রবিবার বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ মোকার ল্যান্ডফল। সে সময় তার সম্ভাব্য সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকতে পারে ১৬০-১৭৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা।