তার পর এ বার কেমোথেরাপি, রেডিয়োথেরাপি, নিউক্লিয়ার মেডিসিন, অঙ্কো-প্যাথলজির মতো ক্যান্সার-চিকিৎসা ও রোগ নির্ণয়ের যাবতীয় প্রক্রিয়ার খরচে ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া হলো স্বাস্থ্যসাথীতে। এই মর্মে বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য দফতর একটি আদেশনামা জারি করেছে।
কেমন বেলাগাম খরচ হতো?
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, হয়তো সাধারণ লিনিয়র অ্যাক্সিলারেটরে রেডিয়েশন দেওয়া হয়েছে কোনও ক্যান্সার রোগীকে। কিন্তু সেই বাবদ বিল করা হয়েছে কখনও ৫০, কখনও বা ৬০ হাজার টাকা। এখন স্বাস্থ্য দপ্তর এ ক্ষেত্রে ৩৫ হাজার টাকা ঊর্ধ্বসীমা ধার্য করেছে।
ইলেকট্রন বিম রেডিয়েশনে যেখানে দেদার ২০, ২৫, কখনও বা ৩০ হাজার টাকার বিল করা হতো, সেখানে এই খাতে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা বিল করা যাবে বলে জানানো হয়েছে। আবার টোমোথেরাপি রেডিয়েশনের জন্য দেড়-দু’লক্ষ টাকার বিলও জমা পড়েছে স্বাস্থ্যসাথী পোর্টালে। এখন এই খাতে ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকার ঊর্ধ্বসীমা ধার্য করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের আদেশনামায় এ-ও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে, কেমো-র যে সব ওষুধ স্বাস্থ্যসাথীর তালিকায় নেই, সেই সব ওষুধ ব্যবহার করতে গেলে সরকারি হাসপাতালেই ভর্তি হতে হবে রোগীকে। এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, “এই সব ওষুধ ও পরিষেবার খরচে আগে বাঁধাধরা কোনও দর ছিল না। ফলে, কোনও নিয়ন্ত্রণ ছিল না বেসরকারি ক্ষেত্রে বিলিংয়ের উপর। এ বার ওই খরচে রাশ টানা সম্ভব হবে।”
তিনি জানান, কেমোথেরাপির সব ধরনের ওষুধে এবং নিউক্লিয়ার মেডিসিন ও অঙ্কোলজি মিলিয়ে ১৯ রকমের রেডিয়োথেরাপির সর্বোচ্চ খরচ বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য ভবনের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, বহু ক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা ক্যান্সার-রোগীদের এমন সব ছোট বেসরকারি হাসপাতালে কিংবা স্থানীয় নার্সিংহোমে চিকিৎসার পরামর্শ দিচ্ছেন, যেখানে ক্যান্সার চিকিৎসার পরিকাঠামোই নেই। বিশেষ করে, এটা হচ্ছে কেমোথেরাপির ক্ষেত্রে।
সেই সব হাসপাতাল বা নার্সিংহোমের সঙ্গে আবার ওই চিকিৎসকরাও যুক্ত। স্বাস্থ্য ভবনের বক্তব্য, রোগীর চিকিৎসা বাবদ বেশি বিল করা হচ্ছে, যার লভ্যাংশ নার্সিংহোম মারফত পৌঁছে যাচ্ছে অসাধু চিকিৎসকদের পকেটেও। এই প্রবণতা বন্ধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা কোনও ক্যান্সার রোগীর চিকিৎসা বেসরকারি হাসপাতালে হলে ওই সরকারি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষকে তার কারণ-সহ লিখিত ব্যাখ্যা দিতে হবে।