অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাদের রায়গঞ্জ গভর্মেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে তাদের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বৃহস্পতিবার এক শিশুকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন অসীম দেবশর্মার স্ত্রী। এবং চিকিৎসা চলাকালীন শনিবার রাতে মৃত্যু হয় অপর শিশুটির।
পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক অসীম দেবশর্মা অর্থের অভাবে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে কোনও অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করতে না পারায়, মৃত ছেলেকে একটি ব্যাগে ভরে বেসরকারি বাসে করে রায়গঞ্জ পৌঁছন এবং পরবর্তী সময়ে অপর একটি বাসে চেপে কালিয়াগঞ্জে আসেন। অসীম দেবশর্মা জানিয়েছেন, “চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমার যেটুকু টাকা ছিল সব শেষ হয়ে গিয়েছে।
মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্সের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গেলে অ্যাম্বুল্যান্স চালকেরা অ্যাম্বুল্যান্সের ভাড়া ৮ হাজার টাকা দাবি করে। এমনিতেই চিকিৎসা বাবদ ১৬ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে। তাই বাসে করেই ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছি”। রায়গঞ্জের মহকুমাশাসক কিংশুক মাইতিকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিশদে কিছু বলতে চাননি। বলেন, “বিষয়টি আমি প্রথম শুনলাম। আমার জানা ছিল না। আমি এবার খোঁজ খবর নিয়ে দেখব”। এদিকে, এই ঘটনার খবর পেয়ে কালিয়াগঞ্জের BJP কাউন্সিলর গৌরাঙ্গ দাস বলেন, “এটা খুবই কষ্টদায়ক ঘটনা।
ঘটনার খবর পেয়েই কোনও রাজনৈতিকভাবে নয়, মানবিকতার খাতিরে একটি অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। অন্তত যাতে বাড়ি পর্যন্ত মৃত শিশুটিকে অ্যাম্বুল্যান্সে নিয়ে যেতে পারে শিশুটির অসহায় বাবা”। তবে এই ঘটনায় গরিব ও অসহায় মানুষের এই পরিস্থিতির জন্য রাজ্য সরকারের কাছে প্রশ্ন করেছেন গৌরাঙ্গ বাবু।
গোটা ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকাজুড়ে। অপরদিকে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি নিতাই বোশ্রু জানিয়েছেন, “ঘটনাটি খুবই দুঃখদায়ক। তবে পরিবারের লোকেরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা ব্যবস্থা নিতাম”। কয়েকমাস আগে জলপাইগুড়ি জেলার কাঁধে করে মৃতদেহ বয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনার পর ফের এই ঘটনা আর একবার প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিল রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে।