বিষয়টি জানতে পেরেই শ্বশুরবাড়ি থেকে মেয়েকে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে আসে পরিবারের সদস্যরা। শনিবার গভীর রাতে স্ত্রীকে ফোন করে স্বামী। ফোন পাওয়ার পরই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হলেন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী, এমনটাই অভিযোগ পরিবারের। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হরিরামপুর থানার শিরশি গ্রাম পঞ্চায়েতের শিরশি এলাকায়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার নাম শিল্পী সাহানারা(২০)। রবিবার সকালে বাপের বাড়িতেওই ওই মহিলার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়।
এই ঘটনার পর হরিরামপুর থনায়া স্বামী সহ মৃত মহিলার শ্বশুরবাড়ির সাতজনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ পেতেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর থেকেই পলাতক স্বামী সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে তা ময়নাতদন্তের জন্য বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে পাঠায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১১ মাস আগে শিল্পীর সঙ্গে মালদার গাজোল দেউতলা পদমপুকুর এলাকার রাকিব হুসেনের বিয়ে হয়। দেখাশুনা করেই বিয়ে হয়েছিল তাঁদের৷ রাকিব স্থানীয় পঞ্চায়েতে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করত। বিয়ের পর থেকে দু’জনের দাম্পত্য জীবনে কোনও সমস্যা না থাকলেও মাস চারেক আগে রাকিবের ভাইয়ের বিয়ে হয়
ভাইয়ের বিয়ে হওয়ার পর থেকে সমস্যার সূত্রপাত। ভাইয়ের স্ত্রীয়ের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে রাকিব, এমনটাই অভিযোগ। সেই সময় তিনমাসের অন্তঃসন্ত্বা ছিলেন শিল্পী। কিছুদিন পরই জায়ের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানতে পারে শিল্পী। এর পর থেকে শুরু হয় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বচসা। অকারণে শিল্পীকে মারধর কার হত বলে অভিযোগ পরিবারের।
পরিরারের অভিযোগ, শুক্রবার শিল্পীকে জোর করে কীটনাশক খাইয়ে খুনের চেষ্টা করে রাকিব ও তার পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু তাঁরা সফল হয়নি। বাপের বাড়িতে চলে আসেন ওই মহিলা। শনিবাার গভীর রাতে শিল্পীকে ফোন করে রাকিব৷ প্রায় দুমিনিট ধরে কথা হয় তাদের৷ এরপর রাকিব আরও ন’বার তাঁকে ফোন করে। ততক্ষণে শিল্পী গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, তাদের মেয়েকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে।
মৃতার আত্মীয় রিন্টু হক চৌধুরী বলেন, ‘মেয়েকে আত্মহত্যা করতে প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে। যেহেতু সে জেনে ফেলেছিল তার স্বামীর তারই ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’ অন্যদিকে হরিরামপুর থানার আইসি অভিষেক তালুকদার বলেন, ‘এনিয়ে পরিবারের তরফ থেকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্ত শুরু হয়েছে।’