কারণ, কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে, আমেরিকায় গেলেও তাঁর মন পড়ে থাকবে সাহাপুরে। ওরা ঠিক মতো খেলো কি না, রোজ বই-খাতা নিয়ে বসছে কি না- এমন হরেক চিন্তা কিছুতেই স্বস্তিতে থাকতে দেবে না ওঁকে। একা মিশেল নন, তালিকায় রয়েছেন আরও অনেকে। ডায়মন্ড হারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কাজল দে, বাসন্তী দেবী কলেজের রাল্লা গুহনিয়োগী এমনই দুই ব্যক্তিত্ব।
গত কয়েক দশক ধরে ঠিক কত জন পড়ুয়া ওঁদের হাত ধরে সাফল্যের দরজা পার করেছে, সেই সংখ্যা ওঁদেরও সম্ভবত জানা নেই। আবার, কোভিডের প্রকোপ যখন তুঙ্গে, সেই সময়ে রুবি জেনারেল হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগের চিকিৎসক রিমিতা দে রোগীদের পাশে দাঁড়িয়ে অতিমারীর বিরুদ্ধে প্রতিদিন লড়েছেন। যে মা-দের দেখাশোনা করার মতো কেউ নেই, পরম যত্নে তাঁদের নিজের কাছে নিয়ে এসে দেখাশোনা করেন নূপুর গুহ।
আহিরীটোলা সর্বজনীনের পুজোর এ বার ৮৪তম বছর। পুজো কমিটির সাধারণ সম্পাদক শমীক সাহা বলেন, ‘দুর্গা জগতের মা। আমাদের পরিকল্পনাই ছিল, বিশেষ ওই মা-দের সম্মান দিয়ে মা দুর্গার পুজোর তোড়জোড় শুরু করা হবে।’ শমীকের কথায়, ‘মা-রা সন্তানদের জন্য সব কিছু করেন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, জন্ম সূত্রে সন্তান না-হলেও কয়েক জনকে সন্তান স্নেহেই দেখেন বহু মহিলা।
সেই মা-দেরই আমরা বলছি ব্যতিক্রমী মা, বিশেষ মা। এ বার মাতৃদিবসে তাঁদেরই আমরা সম্মান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ আহিরীটোলা সর্বজনীন পুজো কমিটির সভাপতি সুশান্তকুমার সাহা বলেন, ‘আমাদের জীবনে ও সমাজে এমন অনেক মা আছেন, যাঁদের অবদান ছাড়া জীবনই এক রকম অসম্পূর্ণ।’
আহিরীটোলা সর্বজনীন পুজো কমিটি রবিবার সন্ধ্যায় এ বছরের থিমও প্রকাশ করেছে। প্রাচীন ভারতের গৌরবের পরিচায়ক কোনও বিখ্যাত সৌধের অনুসরণে এ বার পুজো মণ্ডপ তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। থিমের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অবিনশ্বর’। কমিটির সদস্যদের বক্তব্য, প্রাকৃতিক বিপর্যয় হোক কিংবা বহিরাগতর আক্রমণ, কিছু নির্মাণ কখনও নষ্ট হয় না। সেগুলোই অবিনশ্বর। এমন একটি নির্মাণের আদলে তৈরি হবে এ বারের মণ্ডপ।